এ পি জে আব্দুল কালামের ভাষণ - IIT হায়দ্রাবাদে প্রদত্ত - complete speech of APJ Abdul Kalam in Bengali
এ পি জে আব্দুল কালামের IIT হায়দ্রাবাদে প্রদত্ত ভাষণ
ভারতের জন্য আমার তিনটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে। আমাদের সভ্যতার তিন হাজার বছর ধরে বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে এসেছে এবং আমাদের আক্রমণ করেছে, আমাদের জমি দখল করেছে, আমাদের মন দখল করেছে। আলেকজান্ডার থেকে, গ্রিক, তুর্ক, মােগল, পর্তুগিজ, ব্রিটিশ, ফরাসি, ডাচ সবাই এখানে এসে আমাদের লুঠ করেছে, আমাদের যা ছিল নিয়ে নিয়েছে। আমরা কাউকে আক্রমণ করিনি। আমরা ওদের জমি, ওদের সংস্কৃতি, ইতিহাস দখল করিনি এবং আমাদের জীবন ওদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করিনি। কেন? কারণ আমরা অন্যের স্বাধীনতাকে সম্মান করি।
এজন্যই আমার প্রথম দৃষ্টিভঙ্গি হল ‘ফ্রিডম’ বা স্বাধীনতা। আমি মনে করি, ভারত তার প্রথম দৃষ্টিভঙ্গি পেয়েছিল ১৮৫৭ সালে, যখন আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করেছিলাম। এটাই সেই স্বাধীনতা যা আমাদের অবশ্যই রক্ষাকরতে হবে এবং লালনপালন করতে হবে। আমরা যদি স্বাধীন না হই, কেউ আমাদের সম্মান করবে না।
ভারতের জন্য আমার দ্বিতীয় দৃষ্টিভঙ্গি হল উন্নয়ন। পঞ্চাশ বছর ধরে আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ। এখন সময় এসেছে আমাদের উন্নত দেশ রূপে আত্মপ্রকাশ করার। জিডিপির ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বের প্রথম পাঁচটা দেশের মধ্যে রয়েছি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের দশ শতাংশ বৃদ্ধির হার আছে। আমাদের দারিদ্র্যসীমা হ্রাস পেয়েছে। আমাদের কৃতিত্ব আজ বিশ্ব স্তরে স্বীকৃতি পেয়েছে। এরপরও আমরা নিজেদের উন্নত, স্বনির্ভরশীল ও স্বনিশ্চিত দেশ হিসেবে দেখার আত্মবিশ্বাসের অভাব বােধ করছি। এটা কি সত্যি নয়?
আমার তৃতীয় দৃষ্টিভঙ্গি হল যে বিশ্বের কাছে ভারতকে উঠে দাঁড়াতে হবে। কারণ আমি বিশ্বাস করি যে যদি ভারত বিশ্বের সামনে উঠে না দাঁড়ায় তবে আমাদের কেউ সম্মান শ্রদ্ধা করবে না। একমাত্র শক্তিই শক্তিকে সম্মান করে। আমাদের শক্তিশালী হতে হবে শুধু সামরিক শক্তিতেই নয়, এইসঙ্গে অর্থনৈতিক শক্তিতেও। উভয়ের উচিত হাতে হাত মিলিয়ে চলা। আমার সৌভাগ্য যে তিনজন বিখ্যাত মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযােগ পেয়েছি। মহাকাশ বিভাগের বিক্রম সারাভাই, তার উত্তরসূরি অধ্যাপক সতীশ ধাওয়ান এবং পরমাণু সামগ্রীর জনক ব্ৰহ্ম প্রকাশ। আমি খুব ভাগ্যবান যে এই তিনজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি এবং এই মহান সুযােগ আমার জীবনে এসেছে। আমার কেরিয়ারে চারটি মাইলফলক দেখেছি ।
আমি কুড়ি বছর কাটিয়েছি আইএসআরও-তে। ভারতের প্রথম উপগ্রহ চালিত যানের— এসএলভি৩– প্রজেক্ট ডিরেক্টর হওয়ার সুযােগ আমাকে দেওয়া হয়েছিল। এটা রােহিণী প্রতিস্থাপন করেছিল। আমার বৈজ্ঞানিক জীবনে এই বছরগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমার আইএসআরও জীবন শেষ হওয়ার পর আমি যােগ দিই ডিআরডিও-তে এবং ভারতের মিসাইল কর্মসূচিতে কাজ করার সুযােগ পাই। এটা ছিল আমার দ্বিতীয় আশীর্বাদ যখন ১৯৯৪ সালে অগ্নি তার প্রয়ােজনীয় অভিযান প্রাপ্ত হল।
১১ ও ১৩ মে, সাম্প্রতিক পরমাণু পরীক্ষায় আণবিক শক্তি ও ডিআরডিও-র এই দুর্দান্ত জুটি ছিল। এটা ছিল তৃতীয় আশীর্বাদ। এই পরমাণু পরীক্ষাগুলােয় আমার দলের সঙ্গে কাজ করার আনন্দ পেয়েছি এবং বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছি যে ভারত এটা করতে পারে, আমরা আর উন্নয়নশীল দেশ নই বরং ওদের অন্যতম। এটা আমাকে একজন ভারতীয় হিসেবে খুব গর্বিত করিয়েছে । সত্যি কথা হল এখন আমরা অগ্নির জন্য নতুন কাঠামােয় উন্নয়ন করছি, যার জন্য আমরা এই নতুন সামগ্রী উন্নত করেছি। খুব হালকা সামগ্রী যাকে বলা হয় কার্বন-কার্বন।
একদিন নিজাম ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স থেকে একজন অর্থোপেডিক সার্জন আমার গবেষণাগার দেখতে আসেন। তিনি এই সামগ্রী তুলে উপলব্ধি করেন যে এটা খুব হালকা এবং এরপর তিনি আমাকে তার হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তার রােগীদের দেখান। যেখানে ছােট্ট ছােট্ট বালকবালিকা তাদের পায়ে তিন কেজি ওজনের ধাতুর ক্যালিপার লাগিয়ে শুয়েছিল।
তিনি আমাকে বলেছিলেন : অনুগ্রহ করে আমার রােগীদের ব্যথা দূর করুন। তিন সপ্তাহের মধ্যে আমরা ৩০০ গ্রাম ওজনের ক্যালিপার তৈরি করে অর্থোপেডিক সেন্টারে নিয়ে গেলাম। এটা ছেলেমেয়েরা চোখে দেখেও বিশ্বাস করতে পারছিল না। পা থেকে তিন কেজি ওজন সরিয়ে দেওয়ার পর ওরা তখন হাঁটতেও পারছিল! ওদের বাবা-মায়ের চোখে আনন্দাশ্রু। এটা আমার চতুর্থ আশীর্বাদ।
এখানে সংবাদমাধ্যম কেন এত নেতিবাচক? ভারতে কেন আমরা আমাদের নিজস্ব শক্তি, নিজস্ব কৃতিত্ব স্বীকার করতে ইতস্তত বােধ করি ? আমরা এত মহান দেশ। আমাদের অনেক দুরন্ত সাফল্যের কাহিনি আছে, কিন্তু আমরা সেগুলাে স্বীকার করতে কুণ্ঠা বােধ করি। কেন?
দুধ উৎপাদনে আমরা বিশ্বের প্রথম। রিমােট সেন্সিং স্যাটেলাইটে আমরা এক নম্বর। আমরা দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উৎপাদনকারী। আমরা দ্বিতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী। ড. সুদর্শনের দিকে তাকান, তিনি একটা উপজাতি গ্রামকে স্বনির্ভরশীল, আত্মচালিত গ্রামে পরিণত করেছেন। এরকম লক্ষ লক্ষ কৃতিত্বের কাহিনি আছে, কিন্তু আমাদের সংবাদমাধ্যম শুধুই খারাপ সংবাদ, ব্যর্থতা ও বিপর্যয়ের খবরে মােহাবিষ্ট।
একসময় আমি তেল আভিভে ছিলাম এবং একটা ইজরায়েলি সংবাদপত্র পড়তাম। অনেক আক্রমণ, বােমা বিস্ফোরণ ও মৃত্যু ঘটেছিল একদিন। হামারা আক্রমণ করে। পরের দিন সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় ছিল একজন ইহুদি ভদ্রলােকের ছবি যিনি পাঁচ বছরে একটা মরু অঞ্চলকে অর্কিড ও শস্যভূমিতে পরিণত করেছেন।
এটা ছিল সেই অনুপ্রেরণামূলক ছবি যে সবাইকে জাগিয়ে দেয়। হত্যা, বােমা বিস্ফোরণ, মৃত্যুর খবর ছিল সংবাদপত্রের ভেতরের পাতায় অন্যান্য খবরের সঙ্গে মিলেমিশে। ভারতে আমরা শুধু মৃত্যু, রুগ্নতা,উগ্রপন্থা, অপরাধের খবর পড়ি। আমরা কেন এত নেতিবাচক ?
আরেকটা প্রশ্ন : জাতি হিসেবে আমরা কেন বিদেশি সামগ্রী নিয়ে এত মােহাবিষ্ট? আমরা বিদেশি টিভি চাই, আমরা বিদেশি জামা চাই,আমরা বিদেশি প্রযুক্তি চাই। আমদানিকৃত সামগ্রী নিয়ে আমরা কেন মােহাবিষ্ট। আমরা কি অনুভব করি না যে আত্মনির্ভরশীলতা থেকেই আত্মসম্মান তৈরি হয় ? হায়দরাবাদে আমি যখন এই ভাষণ পেশ করি, একটি ১৪ বছরের মেয়ে আমার অটোগ্রাফ নিতে আসে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি তােমার জীবনের লক্ষ্য কী? সে উত্তর দিয়েছিল : আমি উন্নত ভারতে বাস করতে চাই। তার জন্য আপনারা এবং আমাকে এই উন্নত ভারত গড়তে হবে। আপনারা নিশ্চয় জানেন যে ভারত আর অনুন্নত দেশ নয়, এটা খুব উন্নত দেশ।
আপনাদের কি দশ মিনিট সময় আছে? আমাকে একটু সময় দিন। আপনাদের দেশের জন্য দশ মিনিট সময় দেবেন না? যদি হ্যা বলেন,তাহলে বলুন, অবশ্য পছন্দটা আপনাদের।
আপনারা বলছেন যে 'আমাদের সরকার অক্ষম?
আপনারা বলছেন যে আমাদের আইন খুব পুরনাে?
আপনারা বলছেন যে পৌরসভার গাড়ি আবর্জনা সরায় না।
আপনারা বলছেন যে ফোন কাজ করে না, রেলপথ হাস্যকর, বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ এয়ারলাইন, চিঠি কখনাে গন্তব্যে পৌঁছায় না।
আপনারা বলছেন যে আমাদের দেশ কুকুরের খাদ্যে পরিণত হয়েছে।
আপনারা বলতে থাকুন, বলতে থাকুন।
আপনারা এসম্পর্কে কী করেছেন? সিঙ্গাপুরগামী কোনাে ব্যক্তিকে ধরুন। তার নাম দিন আপনাদের। তাকে একটা মুখ দিন-- আপনাদের। আপনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসুন এবং আপনারা সবার সেরা হয়ে উঠুন। সিঙ্গাপুরে সিগারেটের টুকরাে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা যায় না । তাদের ভূতল যােগাযােগ নিয়ে আপনি গর্বিত হবেন। বিকেল ৫টা থেকে সন্ধে ৮টার মধ্যে ৫ ডলার দিয়ে (প্রায় ৬০ টাকা) অর্চাড রােডে আপনাকে গাড়ি চালাতে হবে। কোনাে রেস্তোরাঁ বা শপিং মলে অতিরিক্ত সময় কাটালে আপনি যেই হন না কেন, পার্কিং মাশুল দিতে হবে। সিঙ্গাপুরে আপনি কিছু বলতে পারেন না, পারেন কি ? দুবাইয়ে রমজানের সময় আপনি প্রকাশ্যে কিছু খেতে পারবেন না। জেড্ডায় আপনি আপনার মাথা না ঢেকে হাঁটতে পারবেন না। আপনি লন্ডনে কোনাে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কর্মীকে ১০ পাউন্ড দিয়ে বলার সাহস করবেন না যে দেখবেন আমার এসটিডি ও আইএসডি কলের বিল যেন অন্য কারও নামে আসে।
ওয়াশিংটনে আপনি ঘণ্টায় ৫৫ মাইল (ঘণ্টায় ৮৮ কিলােমিটার) গতিবেগে গাড়ি চালানাের সাহস করবেন না এবং কোনাে ট্রাফিক পুলিশকে বলতে পারবেন না, জানতা হ্যায় শালা ম্যায় কৌন হু? আমি অমুক, আমি অমুকের ছেলে। দুডলার নাও এবং ভাগাে এখান থেকে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সমুদ্রতীরে আপনি খালি নারকেলের খােলা আবর্জনার বাক্স ছাড়া কোথাও ফেলতে পারবেন না। কেন আপনারা টোকিওর রাস্তায় পানের পিক ফেলতে পারেন না? কেন আপনারা বােস্টনে পরীক্ষার জকি বা নকল সার্টিফিকেট ব্যবহার করতে পারেন না? আমরা এসব কথাই সেই আপনাকে বলছি। আপনি, যে অন্যান্য দেশের ব্যবস্থা শ্রদ্ধা ও সম্মান করেন কিন্তু সেটা কখনাে নিজের দেশে করেন না। ভারতীয় ভূমিতে প্রবেশ করলেই আপনারা সিগারেট ও কাগজের টুকরাে ছুঁড়ে রাস্তায় ফেলেন। যদি আপনারা বিদেশে গিয়ে এসব নিয়ম মানতে পারেন তবে কেন ভারতে একই কাজ করবেন না ?
একবার এক সাক্ষাৎকারে বম্বের বিখ্যাত প্রাক্তন পৌরসভার কমিশনার। তিনাইকর খুব সুন্দর বলেছিলেন, ‘ধনী মানুষদের কুকুর রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে যেখানে সেখানে তাদের মলমূত্র ত্যাগ করে। এরপর সেই একই মানুষগুলাে কর্তৃপক্ষের সমালােচনা করে অক্ষমতা ও নােংরা রাস্তার জন্য।
আধিকারিকরা কী করবেন বলে তারা আশা করেন? তাদের কুকুর যতবার মলমূত্র ত্যাগ করবে সেগুলাে পরিষ্কার করবেন ? আমেরিকায় সব কুকুর যা নােংরা করবে সেটা তার মালিককেই পরিষ্কার করতে হয়, জাপানেও একই নিয়ম। ভারতীয় নাগরিকরা কি এখানে সেটা করে?' তিনি সঠিক কথাই বলেছেন। আমরা নির্বাচনের সময় ভােট দিই সরকার গড়ার জন্য তারপর সব দায়িত্ব তার ওপর দিয়ে আমরা বসে থাকি। আমরা আশা করি আমাদের সরকার সব কাজ করে দেবে কিন্তু আমাদের অবদান একেবারে নেতিবাচক। আমরা আশা করি সরকার সব পরিষ্কার করবে কিন্তু আমরা সর্বত্র নােংরা ফেলা বন্ধ করি না কিংবা আমরা কখনাে রাস্তা থেকে কাগজের টুকরাে কুড়িয়ে আবর্জনার বাক্সে ফেলি না। আমরা আশা করি রেলওয়ে আমাদের পরিষ্কার বাথরুম দেবে কিন্তু আমরা বাথরুমের উপযুক্ত ব্যবহার শিখলাম ।
আমরা চাই ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স ও এয়ার ইন্ডিয়া সেরা খাদ্য ও আতিথেয়তা দেবে কিন্তু আমরা নামমাত্র সুযােগেই তা নষ্ট করতে দ্বিধা করি না। একই কথা প্রযােজ্য সেইসব কর্মচারীর ক্ষেত্রে যারা জনগণকে পরিষেবা দেয় না। সমাজের জ্বলন্ত সমস্যাগুলাের ক্ষেত্রে যেমন মহিলা, পণ, শিশুকন্যা ও অন্যান্য ব্যাপারে আমরা প্রতিবাদ করি এবং ঘরে এসে তার বিপরীত কাজ করি। আমাদের অজুহাত? ‘গােটা ব্যবস্থাটাই বদলাতে হবে, শুধু আমার পুত্রকে পণ নেওয়া থেকে বিরত করলে কী ইতরবিশেষ হবে?
তাহলে ব্যবস্থাটা কে বদলাবে? ব্যবস্থা বা পদ্ধতিতে কী থাকে ? সাধারণভাবে এটা আমাদের অতিথি, অন্যান্য পরিবার, আমাদের শহর, আমাদের সম্প্রদায় ও প্রকার। কিন্তু অবশ্যই আমি বা আপনারা নন। যখন আমাদের কাছে সময় আসে এই পদ্ধতি বা ব্যবস্থায়। ইতিবাচক অবদান রাখার তখন আমরা পরিবারের সঙ্গে নিজেকে নিরাপদ খােলসে আটকে রাখি এবং তাকিয়ে থাকি দূরে যে একজন মিস্টার ক্লিন এসে তার জাদুকরি হাতের ছোঁয়ায় অলৌকিক কিছু ঘটিয়ে আমাদের মুক্ত করবে কিংবা আমরা এই দেশ ছেড়ে চলে যাব। যেমন কাপুরুষের মতাে আমরা ভয় পেয়ে আমেরিকার কাছে দৌড়ে যাই এবং তাদের সাফল্য ও পদ্ধতির প্রশংসা করি। যখন নিউ ইয়র্কে নিরাপত্তার অভাব ঘটে আমরা চলে যাই ইংল্যান্ডে। যখন ইংল্যান্ডে বেকারির সমস্যা তীব্র হয় আমরা পরের উড়ান ধরে চলে যাই মধ্যপ্রাচ্যে। যখন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধভূমি হয়ে ওঠে আমরা তখন নিরাপত্তার জন্য চিৎকার করি এবং ভারত সরকার আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
সবাই এই দেশকে গালি দিচ্ছে এবং ধর্ষণ করছে। কেউ সিস্টেমের কথা ভাবছে না। আমাদের চেতনা এখন অর্থভিত্তিক হয়ে গেছে।
হে ভারতীয়রা,
এই প্রবন্ধ চিন্তা উদ্রেককারী, এটা নিজেকে নিয়ে নিজে ভাবার জন্য এবং নিজের বিবেককে জাগ্রত করার জন্য সেজন্য... আমি জে এফ কেনেডির কথাই পুনরাবৃত্তি করব - ভারতীয়দের জন্য যা তিনি তাঁর দেশ আমেরিকার মানুষদের জন্য বলেছিলেন...
‘নিজেকে প্রশ্ন করাে যে আমরা ভারতের জন্য কী করতে পারি এবং আমেরিকা ও অন্যান্য পশ্চিমী দেশ আজ যা হয়েছে ভারতকে সেরকম গড়তে হলে আমার কী করা উচিত। আমাদের থেকে ভারতের যা প্রয়ােজন আসুন আমরা সেটাই করি।
ধন্যবাদ আব্দুল কালাম
No comments: