নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের উক্তি - অসাধারন ও অনুপ্রেরণামূলক উক্তি
• স্বাধীনতাই জীবন, স্বাধীনতার সন্ধানে জীবন দানে অবিনশ্বর গৌরব।
• সাধনার উদ্দেশ্য মনুষ্যজীবনের রূপান্তর করাে।
• রাজনীতির ক্ষেত্রে মধ্যে মধ্যে মতান্তর হওয়া অনিবার্য এবং মতান্তরের জন্য ঝগড়া বিবাদ হওয়াতে বােধ হয় তদ্রুপ অনিবার্য। কিন্তু মতান্তর যেন মনান্তরে পরিণত না হয় এবং ব্যক্তি নিন্দা ও গালাগালি যেন আমাদের অস্ত্র না হইয়া দাঁড়ায়।
• সার্থক শিল্পী বা সঙ্গীতজ্ঞের এমন একটা সুকুমার স্পর্শবােধ এবং এমন সূক্ষ্ম অনুভূতি থাকে যা তার শিক্ষা বা চর্চা থেকে পুরােপুরি ব্যাখ্যা করা যায় না। যদি শুরু থেকেই তার মধ্যে সহজাত একটা শৈল্পিক প্রবণতা না থাকে সে কখনােই শিল্প-নৈপুণ্যের শীর্ষে উঠতে পারে না।
• যৌবন সর্বকালে সর্বদেশে সৃষ্টিছাড়া ও লক্ষ্মীহারা।
• বিভিন্ন সভ্যতার ও শিক্ষার সংঘর্ষের দরুন চিন্তাজগতে বিপ্লব উপস্থিত হয়। এই বিপ্লবই জাতির চৈতন্যের লক্ষণ।
• আমরা ভারতবাসী-অতএব ভারতের মঙ্গলই আমাদের মঙ্গল।
• সত্য এবং ত্যাগ—এই দুইটি আদর্শ রাজনীতির ক্ষেত্রে যতই লােপ পাইতে থাকে, রাজনীতির কার্যকারিতা ততই হ্রাস পাইতে থাকে।
• জাতিকে যদি জাগাইতে হয় তাহা হইলে বর্তমানের প্রতি প্রবল অসন্তোষ সৃষ্টি করিতে হইবে এবং এক উচ্চ আদর্শের ধ্যান শিখাইতে হইবে। তাই আমাদের যুব-আন্দোলনের একদিকে আছে অসন্তোষ, আর একদিকে আছে আদর্শের আকর্ষণ।
• অন্তরের জাগরণ থেকে সজাত এবং ভবিষ্যৎ সমাজ সম্পর্কে এক নতুন বিশ্বাস এবং স্বপ্ন দ্বারা অনুপ্রাণিত যুব আন্দোলন ব্যতীত যুবকদের দ্বারা পরিচালিত প্রত্যেকটি আন্দোলনকেই আমি যুব-আন্দোলন বলে মনে করি না।
• ব্রহ্মচর্য দুই রকম আছে-প্রথম অবস্থায় ব্রহ্মচর্য মানে শরীরকে শুদ্ধ রাখা। এর পরের অবস্থায় ব্রহ্মচর্য মানে নারীর প্রতি কোনাে কামনা পােষণ না করা।
• কোনাে ‘ism-এর মতবাদের দ্বারা মানবজাতির উদ্ধার হইতে পারে , যদি সর্বাগ্রে আমরা মানুষােচিত চরিত্রবল লাভ না করিতে পারি।
• ভয় জয় করার উপায় শক্তিসাধনা। দুর্গা, কালী প্রভৃতি মূর্তি শক্তির রূপবিশেষ। শক্তির যে-কোনাে রূপ মনে মনে কল্পনা করিয়া তাহার নিকট শক্তি প্রার্থনা করিলে এবং তাহার চরণে মনের দুর্বলতা ও মলিনতা বলি রূপে প্রদান করিলে মানুষ শক্তিলাভ করিতে পারে।
• রাজনীতি এমন কিছু যা গতিশীল এবং যার নিত্য পরিবর্তন ঘটছে। কিছু না করে, অতীতে যে স্বার্থত্যাগ ও সেবা করেছ তারই ওপর ভরসা করে যদি বসে থাক এবং আবদার করাে সবাই সব সময়ে তােমাকে মাথায় তুলে রাখবে, তাহলে তােমার কপালে দুর্গতি অনিবার্য।
• আলােকে জগৎ উদ্ভাসিত করিবার জন্য যদি গগনে সূর্য উদিত হয়, গন্ধ বিতরণের উদ্দেশ্যে বনমধ্যে কুসুমরাজি যদি বিকশিত হয়, অমৃতময় বারিদান করিতে তটিনী যদি সাগরাভিমুখে প্রবাহিত হয়। যৌবনের পূর্ণ আনন্দ ও ভরা প্রাণ লইয়া আমরাও মর্তলােকে নামিয়াছি একটা সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য।
• স্বাধীনতা বলিতে আমি বুঝি সমাজ ও ব্যক্তি, নর ও নারী, ধনী ও দরিদ্র সকলের জন্য স্বাধীনতা, শুধু ইহা রাষ্ট্রীয় বন্ধন মুক্তি নহে, ইহা অর্থের সমানবিভাগ, জাতিভেদ ও সামাজিক অবিচারের নিরাকরণ ও সাম্প্রদায়িকতা, সংকীর্ণতা ও গোঁড়ামি বর্জনও সূচিত করে।
• কেহ কেহ অজ্ঞতাবশত মনে করিয়া থাকেন যে, যুব আন্দোলন রাষ্ট্রনৈতিক আন্দোলনের নামান্তর মাত্র কিন্তু এ ধারণা সত্য নয়। ফুল যখন ফোটে তখন প্রত্যেক পাপড়ির মধ্যে তার সুষমা ও সৌরভ আত্মপ্রকাশ লাভ করে ।
• অরাজকতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা বিপ্লবীদের লক্ষ্য নয়। অবশ্য সত্য যে কখনাে-কখনাে তারা বাস্তবিকই সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় গ্রহণ করে থাকেন—কিন্তু তাদের চরম উদ্দেশ্য সন্ত্রাসবাদ নয়— বিপ্লব এবং বিপ্লবের উদ্দেশ্য একটি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
• যে নেতা জনতার মনস্তত্ত্ব ভালাে মতাে বােঝে সেই নেতারই প্রভাব বেশি, ক্ষমতা বেশি, সাফল্য বেশি।
• পাগল না হলে কেহ বড় হইতে পারে না। কিন্তু সকল পাগল বড় হয় না। ...শুধু পাগল হইলে চলে না। আর কিছু চাই। পাগলামির ভিতর আত্মসংযম হারাইলে কোনাে প্রশ্নের মীমাংসা হইতে পারে । আবেগের ভিতর আত্মস্থ হওয়া চাই।
• বর্তমানের সকল প্রকার বন্ধন, অত্যাচার, অবিচার ও অনাচার ধ্বংস করিয়া নূতন সমাজ ও নূতন জাতি সৃষ্টি করাই তরুণদের আদর্শ হওয়া উচিত।
• প্রথমত জাতীয় ইতিহাস, জাতীয় আদর্শ, জাতীয় ধর্ম ও সমাজনীতির প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া নূতন প্রণালীর প্রবর্তন করিতে হইবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশে যেরূপ দারিদ্র সেই দারিদ্র্য যাহাতে দূর করা যায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হইবে। তৃতীয়ত, আমাদের দেশের ছাত্রদের যেরূপ শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সেই শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপযােগী শিক্ষার প্রণালীই আমাদের উদ্ভাবন করিতে হইবে।
• জাতীয়বাদের সহিত আন্তর্জাতিকতাবাদের কোনাে বিরােধ নাই। আসলে আন্তর্জাতিকতাবাদের পূর্ব শর্তই জাতীয়তাবাদ।
• একটি জাতি বেঁচে থাকতে পারে, যতক্ষণ যে ব্যক্তিদের নিয়ে সেই জাতি গঠিত তারা যখনই প্রয়ােজন দেখা দিবে জাতির স্বার্থে মৃত্যুবরণ করিতে প্রস্তুত থাকিবে।
• ধ্বংস ও সৃষ্টিলীলার মধ্যে যে আত্মহারা হইতে পারে একমাত্র সেই ব্যক্তিই তরুণ। তারুণ্য যার আছে সে ধ্বংস ও সংগ্রামের ছায়া দর্শনে ভীত হয় না। অথবা নব সৃষ্টিরূপ কার্যে অপারগ হয় না।
• তােমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তােমাদের স্বাধীনতা দেব।
• লোকের ধারণাকে বদলাইতে গেলে যে প্রচেষ্টার প্রয়োজন, তাহাতে প্রতিষ্ঠিত দ্বিতীয় মতের সহিত বিবাদ তো বাধবেই। কিন্তু সর্বাগ্রে সমাজকে পুনরায় গড়িয়া তুলিতে হইবে। যাঁহারা দেশের মুক্তির জন্য লড়িতেছেন, তাঁহাদিগকে এই সমস্যার সম্মুখীন হইবার জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে।
• সমাজের ভিত্তি না নড়িলে জাতি জাগিবে না। সমাজের অধিকাংশ লোকের কাছে সামাজিক অত্যাচার রাষ্ট্রীয় অত্যাচারের চেয়ে বেশি সত্য।
• সাহিত্য ও জীবন—অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আমাদের মধ্যে নূতন জীবন না জাগিলে চন্ডী নূতন সাহিত্য অসম্ভব। এই সৃষ্টির জন্য চাই ধ্বংস।
• স্বাধীনতার অর্থ হইল মানুষ হিসেবে স্বাধীনতারূপে বাঁচিবার ও পূর্ণ মনুষত্ব বিকাশের স্বাধীনতা। সমাজের বিশেষ কোনো অংশের সে চিন্তিান সমগ্র সমাজের সে স্বাধীনতা থাকা চাই ।
• আদর্শের নিরন্তর অনুসরণ ও নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামেই জীবনের মৌল সত্য ও তাৎপর্য । চিন্তার উপলব্ধ হয়। তোমাদের আদর্শ কী? সমগ্র ভারতের অখণ্ড ও সর্বাঙ্গীন স্বাধীনতা । কী সাম্য ও মৈত্রীর শাশ্বত নীতির উপর ভিত্তি করিয়া এক নূতন সমাজ ও রাজনৈতিক বিচার ব্যবস্থা গড়িয়া তোলাই তোমাদের আদর্শ।
• মনুষ্যত্ব লাভের একমাত্র উপায় মনুষ্যত্ব বিকাশের সকল অন্তরায় চূর্ণবিচূর্ণ করা।
• যুগে যুগে আদর্শের পরিবর্তন ঘটে। মানুষের দৃষ্টির প্রসার ও লব্ধ জ্ঞান অনুসারে তাহার আদর্শ গঠিত হয়।
• অবলা অর্থে নারী, এই কথা অভিধান হইতে আমাদের মুছিয়া দিতে হইবে। নারীকে অবলা বলিতে বলিতে সে অবলা হইয়া গিয়াছে। অনেকে বলেন, মানুষকে স্বাধীনতা দিলে সে উচ্ছৃঙ্খল হইয়া যায়। এই কথা ভুল।
• মানুষ যতদিন বেপরোয়া ততদিন সে প্রাণবান ৷
• যৌবনের উচ্ছ্বাসই সৃষ্টির তরঙ্গ। আজ পর্যন্ত জগতে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে তার পশ্চাতে রয়েছে ঐ শক্তিমত্ত যৌবন
• হে আমার তরুণ জীবনের দল তোমরাই ত দেশে দেশে মুক্তির ইতিহাস রচনা করেছ।...তোমারাই ত চিরকাল “জীবন মৃত্যু” কে পায়ের ভৃত্য করে রেখেছ কেন তোমরাই ত সকল দেশে আত্মদানের পুণ্য ভিত্তির উপর জাতীয় মন্দির নির্মাণ করেছ ... লাভের আকাঙ্ক্ষা তোমরা রাখনি, ভয় তোমাদের হৃদয় স্পর্শ করে নি, স্বাধীনতা মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বীর সৈনিকের মত তোমরা হাসতে হাসতে মরণকে আলিঙ্গন করেছ।
• আলোকের জগৎ উদ্ভাসিত করিবার জন্য যদি গগনে সূর্য উদিত হয়, গন্ধ বিতরণের তাতীত উদ্দেশ্যে বনমধ্যে কুসুমরাজি যদি বিকশিত হয়, অমৃতময় বারিদান করিতে তটিনী নায়িকা যদি সাগরাভিমুখে প্রবাহিত হয়—যৌবনের পূর্ণ আনন্দ ও ভরা প্রাণ লইয়া আমরা মর্তলোকে নামিয়াছি একটা সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য।
• মনুষ্যদেহ পঞ্চভূতে মিশলেও জীবাত্মাও মরে না। তরুণ মৃত্যুমুখে পতিত হলেও জাতির শিক্ষা-দীক্ষা ও সভ্যতার ধারাই তার আত্মা; জাতির সৃষ্টিশক্তি যখন বিলুপ্ত নিশি হয় তখন বুঝতে হবে যে জাতি মরতে বসেছে।
• জগতে মহৎ প্রচেষ্টা যাহা কিছু আছে, তাহা মনুষ্যহৃদয়ে আত্মবিশ্বাস ও সৃষ্টিশক্তির প্রতিচ্ছায়া মাত্র।
• সর্বাঙ্গসম্পন্ন জাতিকে চোখের সামনে রেখে জাতীয় সাধনায় প্রবৃত্ত না হলে সে সাধনা কখনও জয়যুক্ত ও সাফল্যমণ্ডিত হবে না ।
• সত্য এবং ত্যাগ—এই দুইটি আদর্শ রাজনীতির ক্ষেত্রে যতই লোপ পাইতে থাকে, রাজনীতির কার্যকারিতা ততই হ্রাস পাইতে থাকে।
• বিশিষ্ট সাধনার অভাবে আর্টের উচ্চ আদর্শ যেমন ক্ষুণ্ণ হয়, তেমনি জনসাধারণের কাছে সুগম না হলেও আর্ট এবং জীবনে বিচ্ছেদ ঘটে, আর তাতে আর্ট নির্জীব ও খর্বই হয়ে যায়।
• নিজের প্রতি সত্য হ'লে বিশ্বমানবের প্রতি কেউ অসত্য হতে পারে না।
• ভাপে ভরা আবেগ আর ভালো ভালো কথার বিন্যাস দিয়ে বৈদেশিক নীতি তৈরি হয় না।
• একটা জাতি বেঁচে থাকতে পারে, যতক্ষণ যে ব্যক্তিদের নিয়ে সেই জাতি গঠিত তারা যখনই প্রয়োজন দেখা দেবে জাতির স্বার্থে মৃত্যুবরণ করতে প্রস্তুত থাকবে।
• সার্থক শিল্পী বা সঙ্গীতজ্ঞের এমন একটা সুকুমার স্পর্শবোধ এবং এমন সূক্ষ্ম চাকর অনুভূতি থাকে যা তার শিক্ষা বা চর্চা থেকে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা যায় না। যদি জাতীয় শুরু থেকেই তার মধ্যে সহজাত একটা শৈল্পিক প্রবণতা থাকে সে কখনই শিল্পনৈপুণ্যের উত্তর এবং আলে শীর্ষে উঠতে পারে না।
• যখন সজ্ঞানের উপর স্বার্থের প্রাধান্য ঘটে, আমাদের সর্বনাশ তখন আসন্ন ৷
• যে নেতা জনতার মনস্তত্ত্ব ভালোমত বোঝে সেই নেতারই প্রভাব বেশি, ক্ষমতা বেশি ও সাফল্যও বেশি।
• রাজনীতি এমন কিছু গতিশীল এবং যার নিত্য পরিবর্তন ঘটছে। কিছু না করে, অতীতে যে স্বার্থত্যাগ ও সেবা করেছ তারই উপর ভরসা করে যদি বসে থাক এবং আবদার কর সবাই সব সময়ে তোমাকে মাথায় তুলে রাখবে, তাহলে তোমার কপালে দুর্গতি অনিবার্য।
• বিপ্লব ও বিবর্তনের মধ্যে কোনটিকেই একেবারে বাদ দিয়ে চলা যায় না।
• সমগ্র সমাজের জন্য স্বাধীনতা বলিতে নারী ও পুরুষ—এই উভয়েরই স্বাধীনতা চলতি বুঝিতে হইবে। ইহাতে বুঝিতে হইবে—কেবল উচ্চশ্রেণি নয়, অনুন্নত শ্রেণিকেও লাগাতার স্বাধীনতা দিতে হইবে।...এই দিক হইতে বিচার করিলে মনে হয়, স্বাধীনতা মানেই সাম্য এবং সাম্য মানেই ভ্রাতৃত্ব।
• তরুণের আদর্শ—বর্তমানের সকল প্রকার বন্ধন, অত্যাচার, অবিচার, ও অনাচার ধ্বংস করিয়া আমরা মানুষোচিত চরিত্রবল লাভ করিতে পারি ।
• বিভিন্ন সভ্যতার ও শিক্ষার সংঘর্ষের দরুণ চিন্তা জগতে বিপ্লব উপস্থিত হয়। এই রাষ্ট্রীয় তার মানে বিপ্লবই জাতির চৈতন্যের লক্ষণ।
• রাজনীতির ক্ষেত্রে মধ্যে মধ্যে মতান্তর হওয়া অনিবার্য এবং মতান্তরের জন্য ঝগড়া বিবাদ হওয়াও বোধ হয় তদ্রুপ অনিবার্য। কিন্তু মতান্তরে যেন পরিণত না হয় এবং ব্যক্তিগত নিন্দা ও গালাগালি যেন আমাদের অস্ত্র না হইয়া দাঁড়ায়।
• জীবন না দিলে জীবন পাওয়া যায় না। আদর্শের নিকট যে ব্যক্তি সম্পূর্ণভাবে নিজেকে বলিদান দিয়াছে—শুধু সেই ব্যক্তিই অমৃতের সন্ধান পাইতে পারে।
• ভয় জয় করার উপায় শক্তিসাধনা! দুর্গা, কালী, প্রভৃতি মূর্তি শক্তির রূপবিশেষ । শক্তির যে কোন রূপ মনে মনে কল্পনা করিয়া তাঁহার নিকট শক্তি প্রার্থনা করিলে এবং তাঁহার চরণে মনের দুর্বলতা ও মলিনতা বলিস্বরূপ প্রদান করিলে মানুষ শক্তিলাভ করিতে পারে।
• সাধনার একদিকে রিপু, ধ্বংস করা, অপরদিকে সদবৃত্তির অনুশীলন করা। রিপুর ছালাতা ধ্বংস হইলেই সঙ্গে সঙ্গে দিব্যভাবের দ্বারা হৃদয় পূর্ণ হইয়া উঠিবে।
• জননীকে ভালবাসার অর্থ শুধু নিজের প্রসূতিকে ভালবাসা নয়, সমস্ত মাতৃজাতিকে ভালবাসা।
• যে সমাজে ছাত্রেরা শ্রদ্ধা ও সম্মান পায় না—যে সমাজে ছাত্রেরা শিশুবৎ কেবল কৃপার ও উপদেশের পাত্র–সে সমাজে মনুষ্য সৃষ্টি করা সম্ভব নয়।
• যে ব্যক্তি বাংলার মাতৃজাতিকে শ্রদ্ধা করিতে জানে না-- সে বাংলাদেশকে কি করিয়া শ্রদ্ধা করিবে ?
• মায়ের আরাধনা করিতে শিখ, মাতৃজাতিকে ভক্তি কর, শ্রদ্ধা কর; নিজের দেশে মাতৃজাতির সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখিবার জন্য কৃতসঙ্কল্প হও।
• টাটকা রাঙা ফুলেই দেবীর আরাধনা হইয়া থাকে, আমার তরুণ ভাই সব, তোমাদেরও হৃদয় যখন পবিত্র, শক্তি যখন অফুরন্ত, উৎসাহ যখন অদম্য এবং ভবিষ্যৎ জীবন যখন আশার রক্তিম রাগ রঞ্জিত সেই শুভ সময়ে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ চরণে আত্মোৎসর্গ কর। তো রুমি নতুনের সন্ধান।
• স্বাধীন চিন্তার শক্তি ও হৃদয়ের অপরিসীম উদারতা যাহাতে তরুণ সমাজ লাভ করিতে পারে তার জন্য ছাত্রজীবন হইতেই সাধনা করা চাই।
• অন্তরের জ্বালা জুড়াইবার জন্য দুর্লভ মুহূর্তে অনুপ্রেরণা দিবার প্রকৃতি না থাকিলে আমার মনে হয় মানুষ সুখী হইতে পারে না।
• প্রকৃতির সঙ্গে শিক্ষা না পাইলে, জীবন মরুলোকে নির্বাসনের মত, সকল রস ও অনুপ্রেরণা হারায়।
• ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অবশ্যম্ভাবী।
• পাগল না হইলে কেহ বড় হইতে পারে না। কিন্তু সকল পাগল বড় হয় না। ... শুধু পাগল হইলে চলে না। আরও কিছু চাই। পাগলামির ভিতর আত্মসংযম হারাইলে কোন প্রশ্নের মীমাংসা হইতে পারে না। আবেগের ভিতর আত্মস্থ হওয়া চাই।
• আবেগ না থাকিলে চিন্তা অসম্ভব। কিন্তু শুধু আবেগ থাকিলে চিন্তার ফল ফলে না। অনেকে আবেগবান কিন্তু ভাবিতে চায় না—অনেকে ভাবিতে জানে না।
• আমরা এই democratic যুগে democratic • প্রভাবের মধ্যে জন্মিয়াছি। সুতরাং ঐ স্থানে আঘাত করিলে এই যুগে কিছু করা সম্ভবপর নহে।
• কত বাসনা কোথায় হইতে আসে আবার কিছুদিন পরে কোথায় চলিয়া যায়। সে সব বাসনা কেন আসিল কোথায় হইতে আসিল, খুঁজিয়া পাই না।
• যতদিন আমাদের মহাপুরুষ (greatman)-দের আমরা উপযুক্তভাবে সম্মান করিতে না শিখি ততদিন এ বাঙালির-এ ভারতের উদ্ধার নাই।
• ভারতের উন্নতি যদি কোনদিন হয়— সেটা আসবে ঐ ‘Power of the people". এর ভিতর দিয়া।
• যার প্রাণে সঙ্গীতের কোন সাড়া নেই, সে চিন্তায় বা কার্যে কখনও মহৎ হ'তে পারে না ।
• আমরা ভারতবাসী—অতএব ভারতের মঙ্গলই আমাদের মঙ্গল।
• যেমন সকল নদীর গন্তব্যস্থান সমুদ্র সেইরূপ সমস্ত জীবনের গন্তব্যস্থল ঈশ্বর।
• সৃষ্টিক্ষমতা ও যৌবন সমার্থক। জীর্ণ পুরাতনকে ভাঙিয়া ফেলিয়া তাহার স্থলে ভাগে নবীন ও প্রাণদায়ী কিছু সৃষ্টি করিবার ক্ষমতা ও সাহস যাহাদের আছে একমাত্র তাহারাই নিজেদের যুবক বলার অধিকারী।
• মানবের মনে যখন কোন ব্যক্তি বা আদর্শের ভালবাসা ও ভক্তি বাড়ে তখন ঠিক সেই অনুপাতে স্বার্থপরতাও কমিয়া যায়।
• নিজেকে 'দুর্বল পাপী' যে ভাবে সে ক্রমশ দুর্বল হইয়া পড়ে, যে নিজেকে .. শক্তিমান ও পবিত্র বলিয়া নিত্য চিন্তা করে সে শক্তিমান ও পবিত্র হইয়া উঠে।
• জগতে সবকিছু ক্ষণভঙ্গুর — শুধু একটা বস্তু ভাঙ্গে না বা নষ্ট হয় না— সে বস্তু, ভাব বা আদর্শ ।
• জন্মিবামাত্র আমরা কাতর কণ্ঠে ক্রন্দন করিয়া উঠি সে ক্রন্দন শুধু পার্থিব বন্ধনের চা বিরুদ্ধে বিদ্রোহ জানাইবার জন্য। শৈশব ক্রন্দনই আমাদের একমাত্র বল থাকে কিন্তু যৌবনের দ্বারদেশে উপনীত হইলে বাহু ও বুদ্ধি আমাদের সহায় হয়।
• যৌবন সর্বকালে সর্বদেশে সৃষ্টিছাড়া ও লক্ষ্মীহারা।
• বাঙালির পক্ষে স্বধর্ম ত্যাগ করা আত্মহত্যার তুল্য পাপ। ভগবান আমাদের সার্থক তিনি সম্পদ দেন নাই বটে, কিন্তু তিনি আমাদের প্রাণের সম্পদ দিয়েছেন। অর্থের জন্য নাকা লালায়িত হয়ে যদি প্রাণের সম্পদ হারাতে হয় তবে অর্থে আমাদের প্রয়োজন নেই।
• জাতীয় জীবনের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি বিধান করবার শক্তি এবং জাতীয় শিক্ষার সমন্বয় টাকা (cultural synthesis) করবার প্রবৃত্তি একমাত্র বাঙালির আছে।
• নরম মাটিতে জন্মেছে বলেই বাঙালির এমন সরল প্রাণ!
• মনুষ্যত্ব লাভের একমাত্র উপায় মনুষ্যত্ব বিকাশের সকল অন্তরায় চূর্ণ বিচূর্ণ করা ।
• যেখানে যখন অত্যাচার, অবিচার ও অনাচার দেখিবে সেই উন্নত করিয়া প্রতিবাদ করিবে এবং নিবারণের জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করিবে।
• নিজের উপর বিশ্বাস ও জাতির উপর বিশ্বাস না পাইলে মানুষ কোনও বড় কাজ করিতে পারে না।
• আজ দেশের মধ্যে তিনটি বড় সম্প্রদায় একপ্রকার নিশ্চেষ্ট হইয়া পড়িয়া আছে- ... “ নারী সমাজ, উপেক্ষিত তথা-কথিত অনুন্নত সমাজ এবং কৃষক ও শ্রমিক সমাজ ৷ ইহাদের নিকট গিয়া বল- তোমরাও মানুষ, মনুষ্যত্বের পূর্ণ অধিকার তোমরাই পাইবে।
• জাতি রক্তস্রোত যেন ক্ষীণ হইয়া আসিয়াছে—এখন চাই নূতন রক্ত। ভারতের ইতিহাস পড়িয়া দেখ, বহুবার রক্ত সংমিশ্রণের ফলে ভারতীয় জাতি বার বার মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াও পুনর্জীবন লাভ করিয়াছে। ... আমাদের দেশে অসবর্ণ • বিবাহ বহুকাল নিষিদ্ধ ছিল বলিয়া আমার মনে হয় যে, অসবর্ণ বিবাহ প্রবর্তনের দ্বারা যথেষ্ট রক্তসংমিশ্রণ ঘটিবে এবং এই রক্ত সংমিশ্রণের ফলে জীবনীশক্তি কি আমরা ফিরিয়া পাইব।
• ভারতবর্ষের একটি বিশেষ বাণী আছে এবং জগৎকে তাহা শুনাইবার জন্যই কন্যা ভারতবর্ষ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া বাঁচিয়া আছে। জগতের সাধনা ও সভ্যতার প্রায় প্রতি রূপেই ভারতবর্ষের একটা নব নব অবদান দিবার আছে।
• আমরা এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়াছি একটা উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্ত—একটা বাণী প্রচারের জন্য।
• এই মরজগতে জীবনের আদর্শ ছাড়া সবকিছুই লুপ্ত হয়ে যায়। এই আদর্শ তখনই অনির্বাণ থাকে যখন লোকে তার মৃত্যুবরণ করতে দ্বিধা করে না। পবিত্র কোন আদর্শের জন্য ব্যক্তিবিশেষের যখন বিলুপ্ত হয়, তখনও সেই আদর্শের কিন্তু মৃত্যু হয় না—অন্যের মধ্যে দিয়েই কোন আদর্শ বড় হতে পারে, বিকাশ লাভ করতে পারে। দেহ থেকে যেমন দেহের জন্ম হয় ঠিক তেমনিই আত্মশক্তি একই প্রকার 1* আত্মজ শক্তিকে জন্ম দেয়।
• ভুলো না, মানুষের চেয়ে বড় অভিশাপ গোলাম হয়ে বেঁচে থাকা। ভুলো না, জঘন্যতম অপরাধ অন্যায় ও অবিচারের সঙ্গে আপস করা। মনে রেখো, শাশ্বত চাশছো সেই বিধান; জীবন যদি পেতে চাও জীবন তাহলে দিতে হবে। মনে রেখো, শ্রেষ্ঠ ধর্ম অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা, তার জন্যে যত মূল্য দিতে হোক।
• মানুষ কেবল অন্নেই বেঁচে থাকে না; তার নৈতিক ও আত্মিক পুষ্টির প্রয়োজন কি আছে।
• কি ব্যক্তি, কি জাতি কাহারও পক্ষেই অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির নিরবচ্ছিন্ন জীবন লাভ করা সম্ভব নয় ।
• তুমি নিজে যত শক্তিশালী তাহার অপেক্ষা ঢের বেশি শক্তিশালীরূপে নিজেকে প্রচার করাই হইতেছে রাজনৈতিক দর-কষাকষির গোপন কথা।
• আধুনিক যুগে দারিদ্র্য ও বেকারি দূর করা কুটিরশিল্পের দ্বারা কখনও সম্ভব নয়। দেশের বৃহত্তর অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান একমাত্র পরিকল্পিত যন্ত্রশিল্পের উন্নয়নের দ্বারাই সম্ভব। নি । অর্থনৈতিক চিন্তা ।
• এটা সর্বদেশে সর্বজীবে (লোকে?) দেখতে পাওয়া যায়—যাঁরা নূতন পথ দেখান, মানুষকে যারা নূতন সত্যের উপলব্ধি করাবার চেষ্টা করেন, তাঁদের মহত্ত্ব, তাঁদের মূল্য সাধারণ লোকে বোঝে না। বরং সেই সত্যদ্রষ্টা ও সাধকদের শূলে চড়াবার চেষ্টা করে।
• স্বাধীনতার পথ কণ্টকময় পথ—কিন্তু ইহা অমরত্বের পথও বটে।
• বৈদেশিক নীতি বাস্তব বুদ্ধিতে চালিত হয়, সেই নীতি নির্ধারণে জাতির নিজস্ব নীচে স্বার্থের দিকটাই প্রবল।
No comments: