শ্রী "ম" - মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের বাণী - Quotes by Sri Mahendranath Gupta

 শ্রী "ম" ,  শ্রীম কার ছদ্মনাম ? - শ্রী মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের । পড়ুন তাঁর কিছু অসাধারন বাণী - 


শ্রী মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত


• সব যেন মহাসমুদ্রে এক একটি ভুড়ভুড়ি। ...মানুষ, গুরু, গাছপালা, নদী, পাহাড়, এই পৃথিবী তার থেকে হচ্ছে, তাতে মিশে যাচ্ছে।...সসীম বস্তু মাত্রই মরণের অধীন।

• শিক্ষকতা একটি শিল্প। ভালাে করে অপরকে পড়াতে গেলে এই শিল্পটি বিকশিত করা চাই আন্তরিক চেষ্টা করে।

• বৈজ্ঞানিকরা তাে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জ্ঞানের অনুসন্ধানে নিরত। (কিন্তু) শুধু বুদ্ধি দিয়েই আধ্যাত্মিক তত্ত্ব ধারণা করা সম্ভব নয়। “তিনি” বাক্য-মনের অতীত অচিন্ত্যনীয় অনির্বচনীয়।

• দীক্ষার আগে (ভাবী) গুরুকে দশ-পনেরাে দিন ভালােভাবে লক্ষ্য করবে। তারপরও যদি তিনি মনে আকর্ষণ জাগান তবে দীক্ষা নিও। দীক্ষা নেবার পর ভােগবিলাসের আবর্তে ডুবে থাকলে, দীক্ষা কী উদ্দেশ্য সাধন করবে?

• ঈশ্বর দর্শন হলে বােঝা যায় ঈশ্বরই কর্তা মানুষ অকর্তা। যতদিন না তা হয় মনে হয় (মানুষ) যেন স্বতন্ত্র। সাক্ষাৎ হলে দেখতে পায় সব পরতন্ত্র ঈশ্বরের অধীন।...সবই তার ইচ্ছা। ভক্ত বলে যে কোনাে ছাড় থাকে তা নয়। তবে ভক্ত সম্পূর্ণ তার ওপর নির্ভর করে, কারণ সে জানে যে তিনিই একমাত্র কর্তা।

• (ভােগাসক্তদের) মৃত্যুচিন্তা নেই। লােকে কত মরছে। তাতেও চৈতন্য নেই।...এই ক্ষণেই যে মৃত্যু এসে সব ভাসিয়ে নিতে পারে।....লােক  বাহবা দিচ্ছে “আহা কি পরশ্রমী ইনি।” কিন্তু এসব খাটুনী কী জন্য? টাকা-পয়সা, মান-সম্ভ্রম হবে বলে।....এ দেহ ক্ষয়কারী এবং আত্মঘাতী। পরিশ্রম করে শুধু ভােগের জন্য, ভগবান লাভের জন্য নয়।... “চাহিদা” কমালে সরল জীবন হয় না। আর সরল জীবন না হলে ধর্মজীবন হয় না।

• বুদ্ধি অধ্যাত্মজগতে বেশি দূর এগােতে পারে না, অনুভূতিবান পুরুষের কথায় বিশ্বাস করতেই হবে। উপলব্ধ সত্য আর অর্জিত বিদ্যার অনেক প্রভেদ। 

• সমাধিবান পুরুষ প্রত্যক্ষ করে “কথা” বলে থাকেন।.. তারা অনুভূতির সঙ্গে শোস্ত্ের) যেটি না মেলে সেটি বাদ দেন, তারা বোঝেন, . ” এইগুলি পরে কেউ হয়তো ঢুকিয়েছে। তাই তারা সেগুলি গ্রহণ করেন 'না।

• দশজন লোক খুব মানলো, দশটা বক্তৃতা দিলুম, তবেই আর কি! _.সব হয়ে গেল। মানুষের যতক্ষণ স্বার্থসিদ্ধি ততক্ষণ মান দেবে। তাদের দলের সঙ্গে মিললে তোমার কদর করবে, মানবে। ওদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অনেক সামঞ্জস্য করে, ওদের মনের মত করে বলতে হয়, তা যদি না বলো তো ওরা, কাছে ঘেঁসতে দেবে না। ওদের সম্মান হচ্ছে “পরস্পর সম্মানকারী সমিতির” সম্মান।, ওর-মূল্য কী? | -

• ঠাকুরকে চিত্ত করলেই ভেতরে শুভ সংস্কার হয়। তর ইচ্ছে ই বিবেক, বৈরাগ্য, ভজন, ভক্তি, প্রেম |

• একলা ঘরে থাকলে সর্বাগ্রে উ্রমূর্তি হয়ে ওঠে “কাম” অন্য কামনা-_বাসনা যা দশজনের সামনে মাথা তুলতে সাহস পায় না, তা তখন প্রবলভাবে আক্রমণ করে। নির্জনে গেলে নিজের স্বরূপ চেনা যায়, অহংকার দূর হয় ও ভবিষ্যতের জন্য সাধক সাবধান হতে পারে। (কিন্ত) চঞ্চলচিত্ত সাধকের পক্ষে নির্জনবাস বিপজ্জনক। |

• মানুষের সুখ দুঃখের শরীর। এর অতীত হচ্ছে ভগবানের আননদ। এই আনন্দ অনেক রকমের যেমন, ভজনানন্দ, ধ্যানানন্দ, প্রেমানন্দ, . ব্রহ্মানন্দ। .

• প্রকৃতিতে যেটুকু কর্ম আছে, নিজেকে “অকর্তা” জেনে, কর্মফল ত্যাগ করে সেটুকু করো । এই নিষ্কাম কর্মেই চিত্তশুদ্ধি হয়। তবে সাধন-ডজন না থাকলে ঠিক ঠিক নিষ্কাম কর্ম করা প্রায় অসম্ভব ... কর্ম করা কেন? ভক্তি আসবে বলে।

• তপস্যার অর্থই হলো স্বরূপকে চেনবার চেস্টা। যত ওদিকে মন যাবে তত শক্তি বাড়বে ।....আমরা ঈশ্বরের সন্তান....এই অভিমান বাড়লেই শক্তি অদম্য হয়ে গেলাে।...তপস্যা করলে ঈশ্বরের অনন্তশক্তি সাহায্য করে। সেই শক্তির সাথে মিল হয়ে যায়।

• সাধুদের সান্নিধ্যে...বার বার তাদের সংস্পর্শ অন্তরস্থিত, অবিকশিত আধ্যাত্মিকতা উন্মােচনের সহায়ক হয়। উচ্চকোটির মানুষই মন ও ইচ্ছাকে দৈবীশক্তির দিকে পরিবর্তিত করতে পারেন। সর্বোপরি তারা আধ্যাত্মিক জীবনের বাসনাকে জাগিয়ে তুলতে পারেন। তাই তাদের সান্নিধ্য প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অত্যন্ত মূল্যবান। 

• পড়াশুনায় কত ‘গুণ’ বাড়ে। ধৈর্য, অধ্যবসায়, সঠিকতা, মনােযােগ, একাগ্রতা, দায়িত্ববােধ, দৃষ্টির প্রসারতা, অনুভূতি, কর্মকৌশল, জ্ঞানসমৃদ্ধ না হলে গোঁড়ামি এসে ঢােকে।

• পূজার দ্বারা অতি শীঘ্রই ভগবানের কৃপালাভ হয়। পবিত্রভাব একাগ্রমনে পূজা করে শেষে প্রার্থনাদির দ্বারা তার চরণে আত্মনিবেদন করবে। আর আরতি, ভজন শুনলে মন আপনিই একাগ্র হয়, চেষ্টা করে ধ্যান করতে হয় না। 

• নাম-জপের স্বাদ একবার যদি কেউ পায়, আর কিছু ভালাে লাগে না। বাধা পড়লে বিরক্ত হয়। তিনি আর তার নাম তাে আলাদা  নয়, এক এই নামের চাকায় সংসারের সব বন্ধন, জন্মান্তরের খারাপ সংস্কার পাপ-তাপ সব কেটে যায়, দেহ মন পবিত্র হয়। তাঁর নামেতে মৃত্যুভয় (আর) থাকে না। শুধু আনন্দ। মৃত্যুটা আর কী? একটা অবস্থা বৈ তাে নয়। কৈশাের, যৌবন, জরা যেমন মৃত্যুও তাই।....(তবে) প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। ওটি যে কখন আসবে তার স্থিরতা নেই।

• ব্রহ্মময়ী মা ছাড়া আর কিছুই নেই। মা-ই সত্য মা-ই ব্রহ্ম। তাকে দর্শন করে নিজের (বােধ) করাই জীবনের উদ্দেশ্য। ভক্তি, জ্ঞানবিচার, নিষ্কাম কর্ম এসব উপায় মাত্র।

• সবই তাঁর ইচ্ছায় হচ্ছে। কেউ সন্ন্যাসী, কেউ সংসারী। সাধারণের পক্ষে ভগবানের কার্য বােঝা শক্ত। এত দুঃখ কষ্ট দিয়েই তিনি কী মহৎ উদ্দেশ্য সাধন করেন তা কি সবাই বুঝতে পারে ? 

• বিভিন্ন মতাদর্শ নিয়ে মানুষ ঝগড়া করে, কিন্তু তাকে” জানলে সব জানা হয়। কারণ সমস্ত বৈপরীত্যই তার মধ্যে মিশে গেছে।

• কেবল তার শরণাগতি, অন্য উপায় নেই। (ভয় আদি) সংস্কার কি আর বাইরের কিছু?...ও সংস্কার-টংস্কার নয়, তার মায়াই সব করছেন, আবার মুক্ত করছেন। তিনিই আবার গুরুরূপে মুক্তির উপায় বলে দিতে আসেন। 

• অনেক (দুশ্চিন্তায়) মনে করে “আমার কাম-ক্রোধ আসছে। তাহলে আমার কী হবে।”_ওতে দোষ নেই। সময় হলে ও সব আসে। যৌবনে ও সব এলে যুদ্ধ করতে হবে। এই জন্যই তাে ব্রহ্মচর্য শিক্ষা। সংসারে নানা প্রতিবন্ধক, তাই প্রস্তুত থাকতে হয়। তিনি ওই সব প্রতিবন্ধক করেছেন, আবার “গুরু” রূপে উদ্ধারও করেন, “উপায়” বলে দেন।...তিনি মায়া দিচ্ছেন, আবার গুরুরূপে চৈতন্য করছেন। তার লীলা বোঝা যায় না।

• আহার তিন প্রকার। শুধু স্থূল আহারে কি মানুষের চলে! (অপরবিদ্যা) শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শনশাস্ত্র হলাে সূক্ষ্ম আহার—বুদ্ধিমান লােকের জন্য। আর যারা প্রকৃত “মানুষ” তাদের আহার চাই “পরবিদ্যা” যার দ্বারা (সত্যস্বরূপ) অক্ষর ব্রহ্মকে জানা যায়। 

• অখণ্ড সচ্চিদানন্দ বাক্য মনের অতীত। তাকে ধরা ছোঁয়া যায় না, তিনি কিন্তু ভক্তিতে ভক্তের কাছে বাঁধা, তাই তিনি নিরাকার আবার সাকারও বটে। অবতার যখন আসেন, সােজা পথ দেখিয়ে দেন, কর্ম দেখিয়ে দেন,কর্ম কমিয়ে দেন।....বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন রূপে, বিভিন্ন অবস্থার মধ্য দিয়ে তাকে জন্মগ্রহণ করতে হয়। কালের উপযােগী করে তাকে শেখাতে হয়।...শ্রীভগবানই জগতের মঙ্গলের জন্য শক্তি সঞ্চার করতে আসেন গুরুরূপে।..অবতারের ধ্যান ব্যতীত ভগবানকে ধরবার জো নেই।

• জগতে থাকো, কিন্তু জগৎ-কেন্দ্রিক হয়াে না। আগে নির্জনে জপ ....প্রার্থনা তপ, ধ্যান-ধারণা করে ঈশ্বর দর্শন করতে হয়। তারপর পরহিতে আত্মােৎসর্গ।

• ঈশ্বরলাভের পর কামাদির আক্রমণগত যন্ত্রণা একটুও থাকে না, তখন বিরক্তিবােধও আর থাকে না।

• যাঁদের মন ব্রহ্মে লীন হয়েছে, শরীর থাকলেও তারা জীবন্মুক্ত, তারা এই শরীরে থেকেও সংসার জয় করেছেন। সংসার তাদের আর কিছু করতে পারে না, ভালাে-মন্দ সুখ-দুঃখ এই সব দ্বন্দ্ব থেকে তারা মুক্ত, নির্লিপ্ত। সব তারা সমান (বােধে) দেখেন।

• সর্বদা তার সঙ্গে যােগ দরকার। উপায় হচ্ছে ভালােবাসা। করাে, দ্বারে আঘাত করাে, সেটি খুলে যাবে। ব্যাকুল হও।

• শিক্ষার উদ্দেশ্য দুটি। প্রথম চরিত্র সংগঠন আর দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় পাস।

• ভগবান (শরীরে) এই যে ইন্দ্রিয়গুলি দিয়েছেন তা তাকে আস্বাদন করবার জন্য....সেগুলি বন্ধনের কারণ, সেগুলি আবার মােক্ষেরও কারণ হতে পারে। প্রেয় ত্যাগ করলেই শ্রেয় লাভ ঘটে।

• যার হৃদয় পবিত্র, সে-ই ভগবানকে দেখতে পায়। সাধারণে শুনতেই চায় না। অতীন্দ্রিয় তত্ত্ব নেবার শক্তি কই? কর্মক্ষয় না হলে ধারণাই হয় না।

• ভক্ত যে ভগবানকে ডাকে, সে ভগবানের গুণে। ভগবানই ভক্তকে ডাকান, সেটা ভক্তের গুণ নয়। তিনিই হচ্ছেন প্রেরণাদায়ী শক্তি।

• প্রতিষ্ঠান বা আশ্রম মানুষের জন্য। মানুষ তাে আর আশ্রমের জন্য নয়। শান্ত সমুদ্রে সকলেই ভালাে জাহাজ-চালক হতে পারে। ঝড়ঝঞ্জার মধ্যে জাহাজ চালাতে পারে যে সে-ই দক্ষ। তেমনিই সে-ই প্রকৃত সাধক যে কামাদির তাড়না সত্ত্বেও ঈশ্বরের দিকে মন রাখতে পারে।

• ভগবানের সৃষ্টি কি এতটুকু! অনন্ত জগৎ। তিনি কাকে দিয়ে কী কাজ করান বােঝা শক্ত।..তিনিই কর্তা আর করয়িতা, আমরা বুঝি আর বুঝি।


• মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের বাণী, Quotes by Sri Mahendranath Gupta ,, রামকৃষ্ণ কথামৃত , রামকৃষ্ণ শিষ্য, আধ্যাত্মিক বানী, বাংলা বানী 

শ্রী "ম" - মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের বাণী - Quotes by Sri Mahendranath Gupta শ্রী "ম" - মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের বাণী - Quotes by Sri Mahendranath Gupta Reviewed by Wisdom Apps on July 24, 2021 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.