১। সাধু ব্যক্তির মহিমা কি ?
সাধু ব্যক্তিরা গুণহীন জীবনেরও দয়া করে থাকেন। চাঁদ চন্ডালের গৃহেও জ্যোৎস্না হরণ করে না অর্থাৎ আলো দান করে ।
২। গুনী দুর্জনের সাথে কেমন ব্যবহার করা উচিৎ ?
দুর্জন মানুষ বিদ্যার দ্বারা অলঙ্কৃত হলেও তাঁকে পরিহার করা উচিত । সাপ মনিদ্বারা ভূষিত হলেও সে কি ভয়ঙ্কর নয় ?
৩। বিষধর সাপ না মানুষ বেশী ক্ষতিকর ?
সাপ নিষ্ঠুর স্বভাবের , খল বা দুর্জন ব্যাক্তিও নিষ্ঠুর স্বভাবের , কিন্ত খল বা দুর্জন ব্যাক্তি সাপের চেয়েও অধিকতর নিষ্ঠুর স্বভাবের , কারন মন্ত্র ও ঔষধি দ্বারা সাপকে বশে আনা যায় ; কিন্ত খল বা দুর্জন ব্যাক্তিকে কিসের দ্বারা নিয়ন্ত্রন করবে ?
৪। কার সঙ্গ ভালো ?
দুর্জন ব্যাক্তির সংসর্গ ত্যাগ করো , সাধুসঙ্গ ভজনা করো । দিনরাত পুণ্যকাজ করো এবং সম সময় বা অস্থায়ী বস্তুদের স্মরণে রাখো ।
৫।কার কাছে কি শিক্ষা নেবে ?
বিষ থেকেও অমৃত গ্রহন করবে , অপবিত্র স্থান থেকেও কাঞ্চন অর্থাৎ সোনা তুলে নেবে । নীচ ব্যাক্তি থেকেও উত্তম বিদ্যা শিক্ষা করবে এবং নীচ বংশের কন্যা যদি রত্ন সদৃশ হয় তবে তাকে আনবে ।
৬।প্রাজ্ঞ ব্যাক্তির কর্ম কি প্রকার ?
প্রাজ্ঞ ব্যাক্তি পরের কল্যানে ধনসমূহ ও জীবন উৎসর্গ করেন । বিনাশ যখন নিশ্চিত তখন সৎ কাজেই ঐ দুটি জিনিস ত্যাগ করাই শ্রেয় ।
৭। পৃথিবীতে কে স্বর্গ সুখ অনুভব করবে ?
যে ব্যাক্তির পুত্র অনুগত, যার ভৃত্য এবং স্ত্রীও অনুগত, অভাবের মধ্যেও যে ব্যক্তি সন্তুষ্টি অনুভব করেন , তিনিই এই পৃথিবীতে স্বর্গসুখ অনুভব করেন ।
৮। সৌন্দর্যের বাস কোথায় ?
কোকিলের কন্ঠেই সৌন্দর্য । স্ত্রীলোকেদের সতীত্বেই শোভা । কুৎসিত ব্যক্তিদের বিদ্যাই হল সৌন্দর্য আর তপস্বীদের ক্ষমাগুন হলো তাদের সৌন্দর্য ।
৯। সাধু ব্যক্তির সংকল্প কি হওয়া উচিত ?
যুগের শেষে মেরু পর্বত বিচলিত হয়, প্রলয়কালে সাত সমুদ্র উথলে ওঠে , কিন্ত সাধু ব্যক্তিরা সঙ্কল্প করলে সেই সঙ্কল্প থেকে কখন বিচ্যুত হন না ।
১০। কিসে কার শক্তি ?
দুর্বলের শক্তি রাজা । শিশুদের শক্তি কান্না । মূর্খের শক্তি চুপ থাকা । আর চোরেদের শক্তি মিথ্যা কথা বলা
১১। নিশ্চিত বস্তু ত্যাদের কি ফল ?
যে ব্যক্তি নিশ্চিত বস্ত ত্যাগ করে অনিশ্চিত বস্তু লাভ করার জন্য অগ্রসর হয়, তার নিশ্চিত বস্তু তো নষ্ট হয়ই , তার সাথে অনিশ্চিত বস্তুও নষ্ট হয়েই থাকে ।
১২। ইন্দ্রিয় সংযমের কি ফল ?
ইন্দ্রিয় সমূহ দমন না করাকে বিপদের পথ বলা হয় , আবার ইন্দ্রিয়কে জয় করাই হল সম্পদ অর্থাৎ উন্নতির পথ , তাই ইন্দ্রিয় দমন করাই শ্রেয়ঃ ।
১৩। কোন জিনিসের আবরন কি ?
পৃথিবীর আবরন সমুদ্র , গৃহের আবরন প্রাচীর , দেশের আবরন রাজা, আর স্ত্রীর আবরন তার চরিত্র ।
১৪। মিষ্ট বাক্য বলার সুফল কি ?
প্রিয় কথা বললে সকল জীবই তুষ্ট হয় । সেইহেতু তাই বলা উচিত । কথাতে কৃপণতা করে কোনো লাভ তো নেই ।
১৫। সদ্গুনের মহিমা কি ?
ফলবান বৃক্ষ ফলের গুনে নত হয় । গুনি ব্যক্তিরা গুনভারে নত থাকেন । কিন্ত শুকনো কাঠ আর মূর্খ ব্যক্তিরা ভেঙ্গে যায় ; কিন্ত নত হয় না ।
১৬। বিদ্যা ও অর্থ কখন উপকারে আসে না ?
বই-এর মধ্যে থাকা বিদ্যা আর পরের কাছে থাকা অর্থ প্রয়োজনের সময় কোনো কাজে আসে না ।
১৭। মূর্খের উপর কাজের দায়িত্ব দিলে কি ক্ষতি ?
মূর্খ ব্যাক্তিকে কাজের দায়িত্ব দিলে রাজার তিনটি ক্ষতি হয় - অখ্যাতি বা অপমান , অর্থনাশ ও নরকে গমন ।
১৮। কোথায় কাকে কি দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ ?
অন্দরমহলে পিতৃতুল্য মানুষকে , রান্নাঘরে মায়ের মতো ব্যক্তিকে , গোসেবায় নিজের মতো লোককে এবং কৃষিকাজে নিজেরই যাওয়া উচিৎ ।
১৯। বুদ্ধিমান ব্যক্তির পদক্ষেপ কেমন হওয়া উচিৎ ?
বুদ্ধিমান ব্যক্তি একপায়ে হাঁটেন , এক পায়ে দাঁড়ান । পরবর্তী স্থান ভালোভাবে না দেখে আগের স্থান ত্যাগ করা উচিৎ নয় ।
২০। মহাত্মা ও দুরাত্মার প্রবৃত্তি কেমন ?
দুরাত্মার মনে এক প্রকার ভাব , কথায় এক প্রকার ভাব আবার কাজে অন্য প্রকার ভাব । কিন্ত মহাত্মাদের মনে, কথায় ও কাজে একই প্রকার ভাব থাকে ।
২১। শত্রুর সাথে আবার মিলনের পরিনাম কি ?
যে বন্ধু একবার শত্রুতা করেছে, তার সঙ্গে যে ব্যক্তি আবার মিলিত হতে চায় , সেই ব্যক্তি নিজের হাতে সাপ নেওয়ার মতো নিজের মৃত্যুকেই গ্রহন করে থাকে ।
No comments: