ত্রিপিটকঃ ত্রিপিটক বৌদ্ধ ধর্মীয় পালি গ্রন্থের নাম। বুদ্বের দর্শন এবং উপদেশের সংকলন। পালি তি-পিটক হতে বাংলায় ত্রিপিটক শব্দের প্রচলন। পিটক শব্দটি পালি এর অর্থ - ঝুড়ি, পাত্র, বাক্স ইত্যাদি, অর্থ যেখানে কোনো কিছু সংরক্ষন করা হয়। তিন পিটকের সমন্বিত সমাহারকে ত্রিপিটক বোঝানো হচ্ছে। এই তিনটি পিটক হলো বিনয় পিটক, সূত্র পিটক ও অভিধর্ম পিটক। এটি বৌদ্ধদের মূল ধর্মীয় গ্রন্থ। এই গ্রন্থের গ্রন্থনের কাজ শুরু হয়েছিল গৌতম বুদ্ধ এর পরিনির্বানের তিন মাস পর অর্থাৎ খ্রিষ্ট পূর্ব ৫৪৩ অব্ধে এবং সমাপ্তি ঘটে খ্রিষ্ট পূর্ব প্রায় ২৩৬ অব্ধে। এখানে ত্রিপিটক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বানী দেওয়া হলো -
• জন্মের দ্বারা কেউ নীচ জাতি বা ব্রাহ্মণও হয় না, কেবল কাজের দ্বারাই মানুষ নীচ বা ব্রাহ্মণ হয়ে থাকে।
• ঘৃণা দ্বারা কখনো ঘৃণা পরাস্ত হয় না । কিন্ত প্রেম ও ভালোবাসা দ্বারা ঘৃণা পরাস্ত হয়ে যায় ।
• সত্য কথা বল, ক্ষমা কর ও প্রার্থীব্যক্তিকে দান কর। যদি তােমার অল্প থাকে তবে তার সামান্য অংশ দিতেও কুণ্ঠিত হয়াে না। এই তিন কাজের দ্বারা মানুষ দেবতা হতে পারে।
• যা করা উচিত তা করেনি, যা করা অনুচিত তা করেছে, যারা অহঙ্কারী ও অলস- এমন মানুষের দুঃখ দিন দিন বৃদ্ধি পায়।
• ক্রোধ, নেশা, জেদ, ধর্মের প্রতি অসার অনুরাগ, ঈর্ষা, আত্মপ্রশংসা, নিন্দা, নিজেকে নিয়ে অহঙ্কার ও অপবিত্র সম্বন্ধ—এই সকল কাজ অপবিত্রতা ও পাপ উৎপন্ন করে।
• মনকে নিজের আয়ত্তে রাখাই সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ। মনকে বশে রাখা বড় কঠিন, কারণ মন বড় চঞ্চল, কখন সে কোন বিষয় নিয়ে কোথায় ছুটে যাবে তা কেউ বলতে পারে না। তাই মনকে সংযত করাই সুখী হওয়ার পথ। মন সংযত করতে পারলে সব কাজেই জয়ী হওয়া যায়।
• কষ্টসহিষ্ণু ও বিনয়ী নম্র হওয়া, সাধুসঙ্গ ও সৎপ্রসঙ্গ আলােচনা করা যথার্থ সুখ।
• প্রত্যেক বিষয়ে যারা পর্বতের ন্যায় অটল ও প্রত্যেক বিষয়ে যারা নিরাপদ, তারাই প্রকৃত সাধু।
• যাহাদিগের হৃদয়ে পাপ , মুখে মধুর বাক্য , তাহারা অমৃত পরিষিক্ত বিষকুম্ভ । দুঃ স্পর্শ শৈলশিলা সদৃশ কঠিনাত্মা তাদৃশ লোক সকলের চির অদর্শনই সমুচিত ।
No comments: