শীতকালে সব বয়সের মানুষের শরীরে ব্যাথা বাড়ে। বিশেষ করে হাড়ের ব্যাথা তো বাড়েই। এমনিতেই অন্য সময় সামান্য আঘাত লাগলে শরীরে যতটা না কষ্ট হয়, শীতকালে সামান্য চোট লাগলে ব্যাথা অনেক বেশি অনুভূত হয়। শীতকালে হাড়ের জয়েন্ট গুলোর ব্যাথা বাড়ে। তার পেছনে কতগুলো কারণ রয়েছে।
● শীতকালে তাপমাত্রা অনেক কমে যাওয়ার কারণে হাড়ের জয়েন্টে থাকা ফ্লুইড বেড়ে যায়। সেজন্য হাড়ের জয়েন্ট গুলোয় ব্যাথা অনুভূত হয়।
● এছাড়া শরীরের মধ্যে যেসব শিরা, উপশিরা আছে, ঠান্ডার কারণে সংকুচিত হয়। শরীরে ব্যাথা হওয়ার এটাও একটা কারণ।
● মানব দেহের মাংসপেশি গুলোও আবহাওয়ার কারণে কুঁচকে যায়।
● তাপমাত্রা কম থাকার কারণে হাড়ের জয়েন্ট গুলির মুভমেন্টও ঠিকমতো হয় না। এইসব কারণগুলির জন্য শীতে হাড়, মাসল সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাথা অনুভব হয়।
যেমন এ সময় দেখা যায়, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরে একাধিক জায়গায় ব্যাথা করছে। বিশেষ করে হাঁটু, গোড়ালির জয়েন্টে ব্যাথা, হাতে বেশি করে অনুভূত হয়। আসলে হাড়ের মুভমেন্ট ঠিক মতো না হওয়ার কারণেই এ ধরণের সমস্যা বেশি হয়। আবার সকালের দিকে কিছুটা হাঁটাচলা করলে, সূর্য্য ওঠার পর কিছুক্ষন রোদে বসলে অধিকাংশ ব্যাথা বেদনা উধাও হয়ে যায়। বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয়।
আমাদের মত হলো, এই সময় শরীরে ব্যাথা কমাতে ঘরের মধ্যে নিজেকে আটকে রাখবেন না। ঘরে চুপচাপ এক জায়গায় বসে থাকলেই বরং ব্যাথা বাড়বে। কারণ, এতে হাড়ের মুভমেন্ট কম হয়। তাই শীতকালে বাইরে বের হন। হাঁটুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন। পারলে ব্যাডমিন্টন খেলুন। ফুটবলও খেলা যেতে পারে। শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করুন।
দুই, সাঁতার কাটতে পারলে খুব ভালো। কারণ জলের নীচে তাপমাত্রা এই সময় বেশি থাকে। সাঁতার কাটলে শরীরের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এর মুভমেন্ট হবে। মনে রাখবেন, এ সময় সাঁতার কাটলে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা বরং কম।
তিন, এছাড়া সবসময় গরম পোশাক পরতে হবে। রাতের দিকে সবকটি দরজা জানালা না দিয়ে অন্তত একটি জানালা খুলে রাখা যেতে পারে।
চার, নিয়মিত ভিটামিন ডি জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
পাঁচ, স্নানের আগে নিয়ম করে তেল মেখে কিছুক্ষন রোদে বসা যেতে পারে। এতে শরীর ভালোও থাকবে।
ছয়, স্নানের সময় গরম-ঠান্ডা জল মিশিয়ে স্নান করে যেতে পারে। একেবারে ঠান্ডা জলে স্নান করলে ঠান্ডা বাড়বে বই কমবে না। তাছাড়া শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সাত, যারা বাইক চালান, তারা হাতের দস্তানা, পায়ে মোজা, মাথার টুপি, হেলমেট, জ্যাকেট পরবেন। কোনোভাবেই শরীরের ভেতরে হওয়া ঢুকতে দেওয়া যাবে না। আট, শীতকালে গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে সেটি হাটু সহ বিভিন্ন জয়েন্টে সেক নেওয়া যেতে পারে। এতে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।
নয়, বয়স্করা সকালের দিকে ঘুম থেকে উঠে গরম জলের সেক নিন। অনেক বেশি আরাম পাবেন। এর পরও যদি ব্যাথা বাড়ে, সেক্ষেত্রে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
শীতকালে ব্যাথা বাড়ে কেন ? কীভাবে ব্যাথা নিয়ন্ত্রনে রাখবেন জেনে নিন ।
Reviewed by Wisdom Apps
on
January 20, 2020
Rating:
No comments: