দিনটা ২৪ শে জুন ২০১৯ । আগের দিন রাত্রে এক ভাই ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছিলো - " দাদা , কাল আমরা শেষ কামড় বসাতে যাবো , তুমি আসবে তো ? "
হেঁসে বললাম - কাকে আবার কামড়াতে যাবি ভাই ? ভেউ ভেউ করে দুর্নাম করেছিস , এবার কি কামড়ে জলাতঙ্ক করে ছাড়বি ? "
পরের দিন যে এভাবে আমার মুখের কথা জল-আতঙ্কের রূপ নেবে ভাবতে পারিনি ।
যাইহোক - কিছু হাসি ঠাট্টা করার পর বললাম - মায়ের অসুখ , আন্দোলনে যেতে পারবো না । ভাইটা আর কিচ্ছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দিল ।
রাত তখন ৯ টা হবে ,প্রতিদিন এই সময়ে পাশের বাড়ির মেয়েটি বেশ চিৎকার করে পড়াশুনা করে । কোনো কোনো দিন ওর পড়া কানে আসে । শুনতে বেশ লাগে । পাড়ায় দু'এক জন নতুন সঙ্গীত শিল্পীও হয়েছে , তাদের বেসুরো গানের চেয়ে পড়ার আওয়াজ বেশ মধুর । সেদিনও মন গেল , কি পড়ছে শুনতে পেলাম ।
সিপাহী বিদ্রোহের কারন ও ফলাফল ।
আশ্চর্য , হঠাত মনে হল - কালকের আন্দোলনটা কি সিপাহী বিদ্রোহের থেকে কোনো অংশে কম ? মনের মধ্যে এক আলাদা ভাবের সঞ্চার হল । এই আন্দোলন কি একরকম স্বাধীনতার আন্দোলন নয় ? - স্বল্প বেতনের লজ্জা থেকে স্বাধিনতা , মানুষের হাজারো বাঁকা প্রশ্নের থেকে স্বাধীনতা , মন খুলে বাঁচতে না পারার জ্বালা থেকে স্বাধীনতা ।
সিপাহী বিদ্রোহ একটি চরম অসফল বিদ্রোহ , ইংরেজদের কাছে গো হারা হেরেছিল সিপাহীরা । এমনকি মঙ্গল পান্ডে আত্মহত্যা করতে গেছিলেন । তবু আমরা স্বাধীনতার প্রথম সংগ্রামের কথা ভাবলেই এই বিদ্রোহের কথাই আগে মনে করি । এই বিদ্রোহ যেমন স্ফুলিঙ্গ ছিল পরবর্তী হাজারো সংগ্রামের , তেমনই হয়তো কালকের সংগ্রাম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ।
আর আমি স্কুলে বসে হটস্টার চালিয়ে লাইভ টিভিতে দেখবো - আন্দোলনের কি পরিস্থিতি ?
ভাবলাম , আমি কি এতটাই সঙ্কীর্ণ ?
মন আর মানলনা । ঠিক করলাম যাবই , দেখি কি হয় -
পরদিন সকাল আট'টার ট্রেন ধরবো ঠিক করেও পারলাম না । পরের ট্রেন সকাল ন'টায় । তাই হোক । বেড়িয়ে পড়লাম , কি হবে জানিনা তাই আলাদা কোনো প্রস্তুতিও নিইনি । জল , ছাতা , মানিব্যাগ , আই কার্ড আর ট্রেনে বসে পড়ার জন্য ব্রাইয়ান ট্রেসির বই ' মাস্টার ইওর টাইম , মাস্টার ইওর লাইফ ' নিয়ে নিলাম।
শিয়ালদহ পৌঁছে জানতে পারলাম - সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে যেতে হবে । ওখান থেকেই যাত্রা শুরু হবে । হয়তো শেষ হবে ধর্মতলায় রানী রাসমনী রোডে । উত্তেজনায় টগবগ করছে শরীর । কদিন আগেই একটা স্মার্ট ওয়াচ কিনেছিলাম । ঘড়িটাতে সময় ছাড়াও দিনে কত কিমি হাটলাম , হার্ট রেট কত - এরকম অনেক কিছু দেখা যায় । আন্দোলনে হাঁটতে হবে বলে স্মার্ট ওয়াচ পড়েই এসেছিলাম । শিয়ালদহ থেকে কিছুক্ষন হেটে পৌছালাম সুবোধ মল্লিক স্কয়ার-এ । দেখি কয়েক হাজার শিক্ষক রাস্তা জুড়ে দাড়িয়ে আছেন । পিছনের দিকের কয়েকজন চায়ের দোকানে বসে চা বিস্কুট খেয়ে নিচ্ছেন । অনেকে হাততালি দিয়ে জোড়ে জোড়ে - " পি.আর.টি , পি.আর.টি " বলে চিৎকার করছে । বেশ একটা দুর্গাপুজার মতো পরিবেশ । শুনতে পেলাম টুপি আর ব্যাচ সামনে গেলে পাওয়া যাবে । কয়েক হাজার মানুষকে পাশ কাটিয়ে সামনে গেলাম । ভিড়ের এক্কেবারে সামনে ক্যামেরা হাতে কয়েকজনকে দেখলাম । আর দেখলাম " ইউইউপিটিএ "এর এক একটি অক্ষর হাতে নিয়ে দারিয়ে আছেন দিদি মনি ও মাস্টারমশাইরা । ব্যাচ পেলাম , সেফটিপিনও; কিন্ত টুপি নেই ।
এবার পালা চেনাজানা মুখ খোজার । লাইনের শেষ মাথা আর দেখা যায়না । তারই মধ্যে কিভাবে যেন জনা চারেক অতিপরিচিত শিক্ষকমশাইদের পেয়ে গেলাম । কিছুক্ষন অপেক্ষার পর বড় ব্যানার এল । দুটি ম্যাটাডো গাড়িও এলো , নেতৃত্ব যারা দিচ্ছেন তারা গাড়িতে করে রওনা দিলেন , তাদের হাতে মাইক্রোফোন । গাড়ির মাথায় লাগানো মাইক । কাছ থেকে দেখেছিলাম তাই বলতে পারি - নেতৃত্ব প্রদানকারী শিক্ষকদের কয়েকজনের শরীর বয়সের ভারে ঝুঁকে পড়া গাছের মত হলেও তাদের উদ্যম এক আলাদা স্পার্কের জোগান দিচ্ছিল আমাদের মধ্যে । ১২ টা নাগাদ শুরু হল মিছিল । দুটি লাইন , রাস্তার দু'পাশ দিয়ে হাটা শুরু , সবাই এখানে শিক্ষক বা শিক্ষিকা । হাঁটতে হাঁটতে চলতে লাগলো স্লোগান - " আমরা কারা ? উস্থিয়ান, সামনে কারা - উস্থিয়ান ..." তারপর - " আমরা কি চাই ? পি.আর.টি ... " আরো অনেক কিছু । চলতে চলতে দেখা পাওয়া গেল সার বেধে দাড়ানো কলকাতা পুলিশের । তারা হাসি হাসি মুখ নিয়ে দাড়িয়ে দেখছিল মিছিলের চলমানতা । পুলিশের সামনে দাড়িয়ে গেলেন একদল শিক্ষক , হাতের তালির সাথে সাথে স্লোগান উঠলো - " পুলিশ তোমার ডি.এ বাকি , এই মিছিলে হাটবে নাকি ?"
দু একজন পুলিশ মুখে এক অসহায় হাসি মেখে আমাদের এগিয়ে যেতে বললেন । আবার সচল হল মিছিল । পৌছালাম ধর্মতলা । নেতৃত্ব থেকে চুপি চুপি বলে গেল - " যতটা পারবেন আস্তে হাটবেন , ঘন্টা খানেক যানচলাচল অচল না হলে আমাদের খবর মিডিয়া নেবে না " । বুঝলাম তো, কিন্তু কত আর আস্তে হাঁটা যায় ? হাঁটতে হাঁটতে চোখ গেল আটকে থাকা গাড়িগুলোর দিকে । বাস , ট্যাক্সি , প্রাইভেট গাড়ি সব সারি বেধে দাঁড়িয়ে আছে । কেন জানিনা , বড় মায়া হল । ভাবলাম - আমরা যখন বাসে থাকি আর সামনে দিয়ে মিছিল যায় , তখন মনে হয় - কখন শেষ হবে ? । জানি , অনেক মানুষ ভয়ঙ্কর ব্যাস্ততা নিয়ে বেড়িয়েছেন । তারা হয়ত হা পিত্যেশ করছেন , হয়তো ভগবানের কাছে চাইছেন - এই জ্যাম তাড়াতাড়ি ঠিক করানোর জন্য । আবার এও মনে হল - ওই বাসে যারা বসে আছেন তাদের মধ্যেও হয়ত কেউ প্রাইমারী শিক্ষক বা কোনো শিক্ষকের স্ত্রী বা সন্তান বা পরিবারের কেউ । এই আন্দোলন তাদের জন্যেও ।
জানিনা মিছিলের আর কতক্ষন লেগেছিল রাস্তা পার হতে , তবে দুপুর ১ টা ১৫ নাগাদ আমরা জড়ো হলাম রানী রাসমনী রোডে । সামনের রাস্তা ঘিরে রেখেছে পুলিশ বাহিনী , প্রথমে একটা ব্যারিকেট , তারপর আরো উচু আরেকটি ব্যারিকেট । কথায় কাজ না হলে এই ব্যারিকেট ভাঙতে হবে । এটাই নাকি নিয়ম । এই দুটি ব্যারিকেট ভাঙতে পারলেই আমরা যেতে পারবো বিধানসভা , তারপর নবান্ন ।
ও , এতো অনেক কাজ । শরীরে শক্তির টান পড়েছে তাই পাশের একটি হোটেলে ঢুকে কয়েকটা নান খেয়ে নিলাম । হোটেলের মালিক জিজ্ঞাসা করলেন - " দাদা , এই " পি.আর.টি কি জিনিস ? সবাই দেখছি চাইছেন আপনারা " , বুঝলাম - সাধারন মানুষ অনেকেই আমাদের আন্দোলনের কারন বুঝতে পারেননি । একটু ভেঙ্গে বোঝালাম । ভদ্রলোক বললেন - " আরে দাদা , আপনারা কি পাগল হয়েছেন ? এ সরকার আর থাকবে না , এ শেষ সময়ে লুটেপুটে নিয়ে যাবে । আপনাদের কিচ্ছু দেবে না ।"
কিছু বললাম না । আমরা রাজনীতি করতে আসিনি । কোনো রঙ নিয়েও আসিনি । শুধুই কয়েকটি দাবি নিয়ে এসেছি । সারা পশ্চিমবঙ্গের প্রায় দুই'লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের মনের কথা সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি মাত্র । এভাবেই তো পরিবর্তন আসে ।
খেয়েদেয়ে শক্তি পেলাম । জড়ো হলাম ব্যারিকেটের কাছে । শুনলাম আমাদের নেতৃত্বদের মধ্যে ৫০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন । কাজেই আর বসে থাকা নয় । ধাক্কা মারো ব্যারিকেটে ।
শুরু তো হল ধাক্কা মারা , কিন্তু লোক কই ? আমরা জনা শ'তেক লোক গায়ের জোড়ে ধাক্কা মেরে চলেছি দড়ি বাঁধা পুলিশ ব্যারিকেটে । উল্টদিক থেকে প্রায় সম সংখ্যক পুলিশ একই তালে উল্টধাক্কা মেরে আটকে রাখছেন ব্যারিকেট । এ যেন পুলিশ আর শিক্ষকের - " দোল দোল দুলুনি খেলা " । আস্তে আস্তে যোগ দেওয়া শুরু করলেন আরো শিক্ষক শিক্ষিকা রা । মনে বল পেলাম । শুরু হল অন্তহীন ঠেলাঠেলি । বোঝা গেল - পুলিশের দম ফুরাতে শুরু করেছে । তাই - রেডি করা হল জল কামান । আগে শুধু টিভিতেই দেখেছি তাই বুঝিনি এর কি ক্ষমতা । ঝড়ের বেগে একরাশ জলরাশি এসে লাগলো বুকের ছাতিতে । পিছিয়ে গেলাম কয়েক হাত । মনে পড়লো , পকেটে আছে কিস্তিতে কেনা ১৩ হাজারের ফোন । পিছিয়ে এলাম বেশ কিছুটা । তখনো জল কামান চলছে পুরোদমে । মোবাইলটাকে ব্যাগে ভরে , ব্যাগটাকে প্লাস্টিকে মুড়ে রেডি হয়ে আবার এগিয়ে গেলাম । নোংরা জলের স্রোত এসে লাগলো কানে , বুঝতে না বুঝতেই আবার , তারপর আবার । অন্য কেউ হলে হয়ত বিরত্ব দেখাতো কিন্তু আমি এক মাস্টারমশাইয়ের ছাতার তলায় গিয়ে কোনোরকমে নিজেকে বাঁচানোর চেস্টা করতে লাগলাম । ছাতার সাথে লড়াই করে জলের তোড় ভিন্ন পথ নিল । এবার শুরু হল হাটু আর মুখে আক্রমন । কিছুক্ষনের জন্য জলের ভয়ে কুকড়ে গেছিলাম । তারপর স্রোত থামল । জল শেষ । রিফিল করতে মিনিট দশেক লাগবে । দেখলাম - বুকের ব্যাচ কোথায় যেন ছিড়ে পড়েছে , জামা , জিন্স , পিঠের ব্যাগ সব ভিজে চুপচুপ করছে । মনে বেশ একটা কষ্ট লাগলো , আমরা প্রাইমারীর মাস্টাররা কি এতটাই অপ্রয়োজনীয় ? এতটাই হেয় ? ন্যায্য দাবির কথা বলায় - গ্রেফতার , জল কামান ? কেমন যেন অবিশ্বাস্য লাগছিল । আরো আশ্চর্য লাগছিল পিছনের কয়েক হাজার শিক্ষকদের দেখে । আমরা খাচ্ছি জল কামান , তাঁরা খাচ্ছেন - চা , সরবত , আখের রস । ভেজা জামাকাপড়েই পিছনের দিকে ছুটে গেলাম - সামনে যাদের পেলাম তাদের বললাম - " আপনারা এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে এগিয়ে আসুন , সবাই মিলে ঝাপিয়ে পড়ি " । তাঁরা অনেকেই আমার ছবি তুলে নিলেন । কয়েকজন পরিস্কার ভাষায় বললেন - " তোমরা লড় আমরা সাথে আছি । বুঝলাম না " এ কেমন সাথে থাকা !!! রাগে শরীরে এনার্জি বেড়ে গেল । আবার গেলাম - ঠেলাঠেলি শুরু । আবার জলকামান শুরু । এবার আর পিছিয়ে আসিনি । বুদ্ধি করে সবাই মিলে ব্যারিকেট না ঠেলে দিলাম এক টান । ব্যাস , আমাদের দিকেই ভেঙ্গে পড়লো ব্যারিকেট । হুড়মুড়িয়ে ব্যারিকেটের উপর উঠতেই টের পেলাম এক মাস্টারমশাইয়ের পা চাপা পড়েছে লোহার ভারী ব্যারিকেটের তলায় । লাফ দিয়ে নেমে গেলাম । সামনে আরো বড় ব্যারিকেট । পিছন ফিরে দেখলাম আহত শিক্ষককে পিছনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । মাস্টারমশাইয়ের চোট কেমন তা দেখার আগেই জল কামান এসে লাগলো গলার কাছে । ছুটে একপাশে চলে গেলাম । সরে গেলাম অনেকটা কোনার দিক , কামানের নাগালের বাইরে । কিছুক্ষন চালিয়ে আবার একটু বিরতি । এই মোক্ষম সময় দ্বিতীয় ব্যারিকেট ভাঙার ।
কিন্তু হায় !! এই ব্যারিকেটের ইঞ্জিনিয়ার পরীক্ষায় ফাঁকি মেরে পাশ করেনি । মজবুত ব্যারিকেট । ব্যারিকেটে ধাক্কা মারতে গেলে পাদানীতে চড়তে হচ্ছে , আর পাদানীটা ব্যারিকেটের-ই অংশ । একেই শক্ত স্টিলের ভার , তার উপরে নিজের ওজন , অন্যপাশে পুলিশ বাবাজীরা যুত করে ব্যারিকেটের পাদানির উপর উঠে বসে আছেন । এ ব্যারিকেট ভাঙতে ক্রেন প্রয়োজন । এমনিতেই শক্তি শেষ , তার উপরে ক্রমাগত জল কামান । এই যুদ্ধও চলল ৩০ মিনিট মত । আর পারছিলাম না । শুকনো ড্রেসের শিক্ষকেরা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন । সত্যি বলতে কি ভীষণ রাগ আর হিংসা হচ্ছিল । মনে হচ্ছিল - আমরা এই হাজার খানেক লোক পাগল , আর বাকি সবাই পাগলা গারদে এসেছেন পাগল দেখতে ।
যাইহোক , ব্যারিকেট যুদ্ধে আমাদের অবশ্যম্ভাবী হার যখন মনের ভিতরে জায়গা গেঁড়ে বসেছে তখন খবর পেলাম - " শিক্ষা মন্ত্রী কথা বলতে রাজি হয়েছেন । সুরাহা হবে " । ৩০ মিনিট রেস্ট । উঠে পরলাম । মাথা ঝিম ঝিম করছিল । গা হাত পা কাঁপছিল । এদিক ওদিক খুঁজে গতকালের ভাইটির দেখা পেলাম । তার জিন্স কিছুটা ভিজেছে । জলের ছিটে লেগেছে বোধ হয় । আমার সাথে কয়েকটা ছবি তুলে বলল - " দাদা , আমার কাছে গামছা আছে তুমি গা হাত পা মুছে এক সেট নতুন জামা প্যান্ট পড়ে নাও । "
বললাম জামা প্যান্ট কোথায় পাবো ? এমন হবে তা তো জানতুম না তাই কিছুই এক্সট্রা আনিনি ।
কাজেই - ধর্মতলা বাজার থেকে একটা নতুন প্যান্ট আর গোল গলা গেঞ্জি কিনে পড়ে ফেললাম । পাশের হোটেলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম । তারপর ফিরত গিয়ে দেখি সব শান্ত । জল কামান আর নেই , সবাই পেপার পেতে বসে শুয়ে আছেন । মাইকে একজন শিক্ষক গান গাইছেন । এভাবেই কেটে গেল অনেকটা সময় । একজন বিজ্ঞ ব্যাক্তি এসে বললেন - " খবর পেলাম এই অবস্থান বিক্ষোভ না তুললে , গ্রেফতার হওয়া ৫০ জন শিক্ষকদের ছাড়া হবে না " ।
গভীর এক হতাশা মন টাকে গ্রাস করে নিল । মাথা আর কান ততক্ষনে ব্যাথার চরম সীমায় পৌঁছে গেছিল । আর ওখানে বসে থাকতে পারলাম না । ভেজা বই ,আধ ভেজা মোবাইল আর ভেজা মানিব্যাগ ভরা ভেজা ব্যাগটাকে কাঁধে নিয়ে উঠে পরলাম শিয়ালদহ যাওয়ার বাসে । মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বললাম - আরে আর কিছু হোক না হোক - এটুকু তো নিশ্চিত হলাম যে আমার স্মার্ট ওয়াচটি সম্পূর্ণ ওয়াটার প্রুফ ।
[ আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম - এক প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ]
***ভালো লাগলে লেখাটি শেয়ার করতে পারেন
জল কামান খাওয়া এক প্রাথমিক শিক্ষকের অভিজ্ঞতা
Reviewed by Wisdom Apps
on
June 27, 2019
Rating:
No comments: