টমাস আলভা এডিসন (১৮৪৭ খ্রি. - ১৯৩১ খ্রি.)
বলা হয়, এই বিজ্ঞানী নাকি সবথেকে বেশি আবিষ্কার পেটেন্ট করেছেন। তিনি কে? কিংবা যদি প্রশ্ন করি, এক প্রথিতযশা বৈজ্ঞানিকের শৈশব কেটেছে রাস্তার এক নগন্য ফেরিওয়ালা হিসেবে। তিনি কে? তোমরা কি তার উত্তর দিতে পারবে?
তিনি হলেন টমাস আলভা এডিসন। বিজ্ঞানের এমন কোনো শাখা নেই, যেখানে তাঁর দৃপ্ত পদক্ষেপ অঙ্কিত হয়নি। এমন কোনো বিষয় নেই, যাকে তিনি আত্মস্থ করেননি। সর্ব অর্থে তিনি ছিলেন সত্যি সত্যি এক জীবন্ত বিস্ময়। বিজ্ঞানের জাদুকর।
স্কুল-কলেজের প্রথাগত শিক্ষা তিনি নেননি। জীবন শুরু করেছিলেন এক হকার হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। অর্জন করেছিলেন প্রভূত অর্থ এবং যশ।
জন্ম হয়েছিল তার ওহিও প্রদেশের মেনলোতে, ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১১ই ফেব্রুয়ারি। বাবার আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ছিল। মা স্কুলে পড়াতেন। স্বভাবতই বাড়িতে লেখাপড়ার একটা পরিবেশ ছিল। কিন্তু এডিসন একেবারে অন্য ধাতের ছিলেন। সব ব্যাপারে প্রশ্ন করাটা ছিল তার একটা বাজে স্বভাব। বকবক করতেন আপন মনে, জানতে চাইতেন, কোন বস্তুতে কি আছে। একটা প্রশ্নের উত্তর পাবার সঙ্গে সঙ্গে আবার শুরু হত একের পর এক প্রশ্ন।
স্কুলে গিয়েও তার এই বকবকানি থামেনি। তার প্রশ্নবানে মাঝেমধ্যেই মাস্টারদের পড়ানোতে ছেদ ঘটত। মাস্টাররা বিরক্ত হতেন। অনেকবার তার বাবা-মাকে স্কুলে যেতে হয়েছে। ছেলের হয়ে কৈফিয়ত দিতে হয়েছে। অবশ্য এজন্য তার সহজাত প্রতিভাকেই দায়ি করা চলে। কেন না প্রবল কৌতূহল আর অনুসন্ধিৎসু বিজ্ঞানী মন নিয়েই তিনি জন্মেছিলেন।
শেষ অব্দি বিদ্যালয় যাওয়া বন্ধ করলেন আলফা এডিসন। শিক্ষকরাও তাকে বিদ্রুপ করায় ভীষণভাবে হতাশ ও বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছিলেন তিনি প্রথাগত শিক্ষার প্রতি। তবে পিতা বুঝতে পেরেছিলেন, ছেলের মধ্যে লুকানো প্রতিভা আছে। তিনি ছেলের অনুসন্ধিৎসাকে আকাশচুম্বি করার চেষ্টা করতেন। সাধ্যমতো জবাব দিতেন ছেলের প্রশ্নের।
বারো বছর বয়স হবার সঙ্গে সঙ্গে এডিসনকে অর্থ উপার্জনের চেষ্টায় নামতে হয়েছিল। এরজন্য যে শুধু সাংসারিক অসচ্ছলতা দায়ী ছিল, তেমনটি নয়। তখন মার্কিন দেশে নিয়ম ছিল, নিজের পায়ে নিজেকে দাঁড়াতে হবে। আমি শুধু বসে বসে মা বাবার পয়সা ধ্বংস করব, তা কেন হবে? ছোটো থেকেই ছেলেমেয়েদের সেখানে স্বাবলম্বী করে তোলা হত। বিদ্যালয় শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তারা স্বাধীনভাবে কিছু টাকা রোজগারের চেষ্টা করত।
এডিসনের জীবন শুরু হল নতুন ধারায়। খবরের কাগজের ফেরিওয়ালা হলেন তিনি। নিশুতিরাতে ঘুম ভেঙে যেত এডিসনের। পায়ে পায়ে হাজির হতেন নিউজ পেপার স্ট্যান্ডে। সেখান থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক কাগজ নিতেন। ভোরের সূর্য যখন পুব আকাশে উঁকি দিচ্ছে, তখন তিনি এক সুবোধ বালকের মতো বাড়ি বাড়ি টাটকা খবরের কাগজ পৌঁছে দিচ্ছেন। সাড়ে পাঁচটার আগেই এই কাজ শেষ করতে হত তাকে। কারণ, কে কত আগে কাগজটি পৌঁছে দেবে, তা নিয়ে হকারদের মধ্যে একটা অলিখিত লড়াই ছিল।
সেই বয়স থেকেই তিনি নানা ধরনের বিচিত্র কাজের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। প্রতিটি কাজের অন্তরালেই তার উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় ছিল।
পনেরো বছর বয়সে তিনি রেলগাড়ির একটি কামরাতে সাজসরঞ্জাম জুটিয়ে প্রেস তৈরি করলেন। প্রকাশ করলেন নানা মুখরোচক খবরে ঠাসা ট্যাবলয়েড বা সংবাদ পত্রিকা। অচিরেই সেই কাগজটি প্রচন্ড জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু বিপণন পদ্ধতির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না। তাঁর বন্ধুবান্ধবেরাই ঘুরে ঘুরে বিক্রি করত। দেখা গেল, কিছুদিনের মধ্যেই কাগজটি পাঠক-পাঠিকার মন জয় করতে সমর্থ হয়েছে। এই সব কাগজে এমন কিছু মুখরোচক খবর থাকত, যা পাঠকরা খুবই পছন্দ করতেন।
কিছুদিন এইভাবে চলল। এরপর এমন একটা ঘটনা ঘটল, যার ফলে আলফা এডিসনের জীবন আবার অন্যখাতে প্রবাহিত হতে শুরু করল।
প্রতিদিনের মতো সেদিনও তিনি স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছেন। বগলে রয়েছে খবরের কাগজের বান্ডিল। গাড়ি এসে দাঁড়ালে কামরায় ঢুকে হেঁকে হেঁকে কাগজ বিক্রি করবেন, এমটাই ছিল তার ইচ্ছে। এমন সময় তিনি দেখতে পেলেন স্টেশনমাস্টারের ছোটো ছেলেটি রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। আর ভীষণ শব্দে মাটি কাঁপিয়ে ছুটে আসছে ইস্পাতের দৈত্য।
ছোটো ছেলেটি এই দৃশ্য দেখে একেবারে হতভম্ব হয়ে গেছে। লাইন থেকে লাফিয়ে সরে যাবার কথাও যেন ভুলে গেছে সে।
এডিসন বুঝতে পারলেন, আর এক মুহূর্তের মধ্যেই ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। অমন সুন্দর শিশুটি পরিণত হবে এক তাল রক্তাক্ত মাংসপিন্ড।
তিনি নিজের জীবনের কথা ভাবলেন না। মুহূর্ত মাত্র বিলম্ব না করে লাফ দিয়ে নামলেন লাইনের ওপর। ছুটে গিয়ে একটানে সরিয়ে দিলেন ছেলেটিকে। সঙ্গে সঙ্গে বিপুল গর্জন করতে করতে ছুটে গেল ইস্পাতের ওই দ্রুতগামী ট্রেনটি।
এডিসনের উপস্থিত বৃদ্ধির জোরেই বেঁচে গিয়েছিল স্টেশনমাস্টারের ছেলেটি। কৃতজ্ঞ স্টেশনমাস্টারের চোখে জল এসে গিয়েছিল। তিনি সেদিনের কিশোর এডিসনকে নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন। তাকে নিজের কাছে রেখে টেলিগ্রাফের কাজ শেখাতে শুরু করলেন। ওই একটি ঘটনাই এডিসনের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ছোটোবেলাতে তিনি যদি এভাবে সহৃদয় স্টেশনমাস্টারের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ না পেতেন, তাহলে হয়তো তার বৈজ্ঞানিক প্রতিভার জাগরণ ঘটত না। আমরা জানি না, পৃথিবীতে কখন কোথায় কি ঘটবে! মনে হয় কোনো এক অদৃশ্য জাদুকর বুঝি সময় অনুসারে সবকিছু সাজিয়ে রেখেছেন। উপযুক্ত সময়ে তিনি সোনার কাঠি রুপোর কাঠি ছুঁইয়ে দেখাবেন এক একটা অদ্ভুত ম্যাজিক!
অল্পদিনের মধ্যেই ব্যাপারটা ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলেছিলেন এডিসন। এবার স্টেশনমাস্টার তাকে ঢুকিয়ে দিলেন টেলিগ্রাফ অপারেটিং-এর চাকরিতে।
আঠারো বছরের কিশোর মন দিয়ে চাকরি করছেন। বেশিরভাগ সময় তাকে অফিসে বসে কাজ করতে হত। যেসব টেলিগ্রাফ অফিসে আসত, সেগুলিকে ধরতে হত। কখনো কখনো একাজে কাজে তাকে বাইরেও যেতে হত।
এখানে যোগ দিয়েও সেই একইরকম প্রশ্ন করা শুরু করলেন এডিসন। অবশ্য এখন আর জোরে জোরে প্রশ্ন করেননা। এখন নিজের কাছে নিজেই জানতে চান, এটা কেন এমন আচরণ করছে, ওর মধ্যে কি আছে, এটা করলে কি ফল পাওয়া যেতে পারে।
তার সাফল্যের পিছনে অনুসন্ধিৎসার সঙ্গে সঙ্গে তার উদ্ভাবনী শক্তিরই একটা বড়ো ভূমিকা ছিল। এবার তিনি নতুন যন্ত্রপাতি নির্মাণের কাজে আত্মনিয়োগ করলেন। তিনি এমন একটি যন্ত্র বানিয়ে ফেললেন, যাতে সংকেত ধরা সম্ভব হল। এতে তার নিজের কাজের খুব সুবিধা হল। যখন তিনি থকেতেন না, তখন আপনা আপনি কাগজে টেলিগ্রাফ রেকর্ড হয়ে যেত।
অবশ্য এই সুবিধাই তার বিপদ ডেকে আনল। একদিন উঁচু মহলে খবরটা পৌঁছে গেল। এডিসন নাকি কাজে ফাঁকি দিয়ে রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, মনের সুখে দিবানিদ্রা দিচ্ছেন, আর তার হয়ে কাজ করছে ওই অদ্ভুদ যন্ত্রটি।
চাকরি গেল এডিসনের। তিনি এলেন নিউইয়র্কে। এক বন্ধুর আস্তানাতে আশ্রয় নিলেন। সেখানে রাতে ঘুমাতেন আর সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়াতেন চাকরির সন্ধানে। তখন দেশজুড়ে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা। কোথাও চাকরি নেই। হতাশ ক্লান্ত রিক্ত তরুণ এডিসন ভাবছেন, এবার কি করবেন?
বন্ধুটি কাজ করত এক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। একদিন তার অফিসের যন্ত্রটি বিকল হয়ে গেল। যন্ত্রটিকে সারাবর জন্য শহরের বড়ো বড়ো মিস্ত্রিকে ডাকা হল। কিন্তু সেই কাজে কেউ সফল হতে পারলনা।
বন্ধুর কাছ থেকে এই খবরটা পেয়েছিলেন এডিসন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি কৌতূহলী হয়ে উঠলেন। যন্ত্র নিয়ে তার চিন্তা ভাবনার বুঝি আর অন্ত নেই। তিনি বিশ্বাস করতেন, প্রত্যেক যন্ত্রের মধ্যে আলাদা জীবন আছে। তারাও মানুষের মতো কিছু বলতে চায়, কিন্তু আমরা তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেই। প্রতিদানে কিছুই দেইনা।
যন্ত্রটা পরীক্ষা করলেন এডিসন। বুঝতে পারলেন কোথায় ত্রুটি আছে। তিনি এবিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন, কেবলই তার মনে হলো সময় এবং সুযোগ পেলে তিনি যন্ত্রটিকে সরিয়ে তুলতে পারবেন।
বলি-বলি করে শেষপর্যন্ত কথাটা বলেই ফেললেন তার বন্ধুকে। বন্ধু তাকে নিয়ে হাজির হলেন ম্যানেজারের কাছে।
ষোলো বছরের এই তরুনের আত্মপ্রত্যয় দেখে ম্যানেজার অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কথাটা তার অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়েছিল। শহরের সেরস বিশেষজ্ঞরা যেখানে হার মেনে চলে গেছেন, সেখানে এই ছেলেটি কোন দুঃসাহস তার কাছে প্রশয় দিচ্ছেন?
শেষ অব্দি ম্যানেজারের মন গলেছিল। মনে মনে তিনি যতই অবিশ্বাসী হয়ে উঠুন না কেন, মুখে তা প্রকাশ করেননি। হয়তো ভেবেছিলেন, দেখাই যাক না, কি কারিগরি করে ছেলেটি।
এডিসনকে সঙ্গে নিয়ে যন্ত্রের কাছে গেলেন তিনি। এডিসন খুব একটা সময় নিলেন না। গলদটা কোথায়, তা নিজের উদ্ভাবনী ক্ষমতার বলে সহজেই ধরে ফেলেছিলেন। খানিকটা নাড়াচাড়া করতেই যন্ত্রটা আবার আগের মতো কাজ করতে শুরু করল।
আনন্দে কৃতজ্ঞতায় ম্যানেজার এডিসনের প্রশংসা করলেন। এতেই ক্ষান্ত হলেন না তিনি। নির্দ্বিধায় এডিসনকে চাকরিতে বহাল করলেন। তখনকার দিনে সেই চাকরি মাইনে ছিল তিনশো ডলার।
বলা যেতে পারে, এটি ছিল এক দৈব যোগাযোগ। এভাবে এডিসনের আর্থিক দুরাবস্থা দূর হল। এখন তিনি নিশ্চিন্তে মনের মতো কাজ করতে পারছেন। হাতে যা পেতেন তা দিয়ে থাকা খাওয়া ভালোভাবেই চলে যেত। শুধু তাই নয়, সপ্তাহান্তে অবাক হয়ে দেখতেন, হাতে বেশ কিছু ডলার জমেছে। এডিসন তা দিয়ে নানারকমের সরঞ্জাম কিনতেন। অবসর মুহূর্তে যন্ত্রপাতি নির্মাণের কাজও শুরু করে দিলেন।
কয়েক মাসের চেষ্টাতে তিনি এমন একটি মেশিন তৈরি করলেন, যা অফিস কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ে গেল। এই মেশিন ব্যবহার করলে একসঙ্গে অনেক কাজ করা সম্ভব। যার সার্থক প্রয়োগে অকারণ খরচও কমতে বাধ্য। অচিরেই খবর পৌছালো জেনারেল ম্যানেজারের কানে। তিনি নিজে এসে মেশিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করলেন। পরীক্ষা করে অবাক হলেন। এইটুকু ছেলে কিনা এমন একটা যন্ত্র বানিয়ে ফেলল।
সেই মেশিনটি বিক্রি হল চল্লিশ হাজার ডলারে। যন্ত্র নির্মাতা হিসেবে এডিসনের খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল।
এই অভাবিত অর্থ লাভ করে এডিসন কৃতজ্ঞতায় গদগদ হয়ে উঠলেন। তার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল একটি গবেষণাগার তৈরি করবেন। এবার সেই স্বপ্নটা সফল হল, তৈরি হল নিজস্ব বিক্ষানাগার।
দলে দলে মানুষ আসতে থাকলেন এডিসনের কাছে। কার যন্ত্র কোথায় বিগড়ে গেছে সব কিছু সারাতে হচ্ছে এডিসনকে।
অনেকে আবার নতুন যন্ত্র তৈরির প্রকল্প জমা দিচ্ছেন এডিসনের কাছে। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের মনের মতো যন্ত্র তৈরি করে এডিসন তাকে লাগিয়ে দিল।
এভাবে প্রচুর অর্থ আয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি একদিন বুঝতে পারলেন, এই গন্ডি থেকে তাকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন এক কৃতিত্ব স্থাপন করতে হবে যা তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।
শুরু হল অন্য পথে পরিভ্রমন। ইতিমধ্যে তিনি নিউজার্সির মেনলোপার্কে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাগার স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে তিনি যা কিছু আবিষ্কার করেছেন তার অন্তরালে আছে এই গবেষণাগারটির উপস্থিতি।
গবেষণা শুরু হল টেলিগ্রাফের মধ্য দিয়ে। এল টেলিফোন। দুটি যন্ত্রের অশেষ উন্নতি সাধন করেছিলেন তিনি। তারপর এলো ফনোগ্রাফ8, বৈদ্যুতিক বাতি- আরও কত কি!
এইভাবে জীবনের অনেকগুলি বছর কেটে গেল। নিজের কৃতিত্বে তিনি নিজেই বিস্মিত হতেন। মানুষের জীবনকে আরও উন্নত করা যেতে পারে এমন যন্ত্রও আবিষ্কার করা সম্ভব। সেই চেষ্টাতেই প্রতি মুহূর্তে নিজেকে গবেষণার মধ্যে নিয়োজিত রেখেছিলেন এই বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক। ফোনোগ্রাফ তৈরি করার সময়ই চিত্রের চলমান অবস্থার চিন্তা এডিসনেরঅথায় এসেছিল। অর্ডার দিয়ে তৈরি করলেন সামান্য চওড়া, পঞ্চাশ ফুট দীর্ঘ সেলুলয়েডের ফিল্ম। তাতে তোলা ছবিকে লেন্সের সাহায্যে পর্দায় প্রদর্শন করলেন। ওই বিশেষ যন্ত্রটির নাম রাখলেন 'কিনেটোস্কোপ'। এডিসনের এই আবিষ্কারের পরিবর্তিত রূপ হল আজকের চলচ্চিত্র।
জানা গেছে, সারা জীবনে ১০০০ বেশি আবিষ্কারের পেটেন্ট নিয়েছিলেন তিনি।
বিজ্ঞানের এই বিস্ময়প্রতিভা ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই অক্টোবর তারিখে ৮৪বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
টমাস আলভা এডিসনের ছোটবেলাকার গল্পকথা আমাদের বার বার পড়া উচিত। তার জীবন সত্যিই যেন এক রূপকথাকার কাহিনি। এডিসনের গল্প শুনলে মনে হয়, উনি যদি পেরে থাকেন আমরা কেন পারব না? চোখ বন্ধ করে একবার ভাবো তো বন্ধুরা, তখনও সকাল হয়নি, প্রচন্ড শীতের শেষ রাত, কাঁপতে কাঁপতে এডিসন চলেছেন খবরের কাগজ আনতে। সেগুলো বিলি করতে হবে, পয়সা উপায় করতে হবে, সংসার দিতে হবে। তারপরও আছে সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনি। তবুও কি তিনি নিরাশ হয়েছিলেন? হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন? জীবনে যারা টমাস আলভা এডিসনে মতো কর্মতৎপরতা আর পরিশ্রমী হন। তাই হাল ছেড়োনা বন্ধু, শুধু এগিয়ে চলো সামনের দিকে
একদিন দেখবে, সফলতাকে তুমি করায়ত্ত করেছ!
হকার থেকে পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানী - আলভা এডিসনের জীবনী
Reviewed by Wisdom Apps
on
March 16, 2019
Rating:
No comments: