১। নানা রঙের মেঘ দেখা যাওয়ার কারণ কি ?
মেঘের নিজস্ব কোন রঙ নেই। নানারঙের আলো মেঘের ওপর পড়ার জন্য মেঘে রঙ দেখা যায়। মেঘের ওপর সূর্যের আলো পড়লে মেঘের রঙ সাদা দেখায়। সূর্যাস্তের সময় সূর্যের লাল আভা মেঘের ওপর পড়লে মেঘকে লাল দেখায়। জলভরা মেঘ ভারী হয়ে যখন নীচের দিকে নেমে আসে তখন পৃথিবীর ছায়া মেঘের ওপর পড়ে তাই মেঘকে কালো দেখায়।
২। বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণ কি ?
বতাস অনবরত আকাশের বুকে ছুটে বেড়ায়। এর মধ্যে কোনটা ঠাণ্ডা, কোনটা গরম। মেঘভরা গরম বাতাস ও ঠাণ্ডা বাতাসের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ঐ অঞ্চলের মেঘ ঠাণ্ডা হয়ে যায়। মেঘের মধ্যস্থিত জলকনা সমষ্টি তখন ভারী হয়ে শুন্যে বেড়াতে পারে না বৃষ্টির আকারে পৃথিবীর বুকে ঝরে পড়ে।
৩। পচা ডিম কেন জলে ভাসে ?
---ডিম ভালো কি খারাপ তার পরীক্ষা করার সব থেকে ভালো উপায় হল, একপাত্র জলে ডিমটি ছেড়ে দেওয়া। ডিম যদি খারাপ হয়, তাহলে সেটা জলের ওপর ভাসতে থাকে। এই ডিম কখনো খাওয়া উচিত না।ডিম পচে গেলে কুসুম আর শ্বেতসার পচন ধরে। এই পচনের ফলে ডিমের কুসুম আর শ্বেতসার হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসে পরিণত হয়। এই জন্য পচা ডিম জলে ভাসে। কারণ হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস জলের থেকে হালকা।
৪। শীতের দিনে উত্তর দিক থেকে বাতাস বয় কেন ?
দক্ষিণায়নে সূর্যের অবস্থানের জন্য শীতকালে দক্ষিণের বাতাস বেশি গরম হয়ে উপরে উঠতে থাকে। শূন্যস্থান পূর্ণ করার জন্য উত্তর দিক থেকে ঠাণ্ডা বাতাস বইতে থাকে।
৫। জ্বরের সময় মাথায় ও কপালে জল দেওয়া হয় কেন ?
জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা বেশি হওয়ার জন্য মাথা ও কপাল গরম হয়। তখন জল ঢাললে জল বাস্পভুত হয় এবং প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা ও কপালে সরবরাহ হয়। ফলে দেহের তাপ কমে ও জ্বর কমে যায়।
৬। সরষের তেল বা সাবান চোখে লাগলে জ্বালা করে কেন ?
আমাদের শরীরের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গের মধ্যে চোখের অচ্ছেদপটল বেশি স্পর্শকাতর। সাবান বা তেলের মত সামান্য উত্তেজক পদার্থের স্পর্শও সহ্য করতে পারে না তাই জ্বালা করে।
৭। রাত শেষ হলে সকালে ঘুম ভেঙে যায় কেম ?
মস্তিষ্কের ক্লান্ত কোষগুলি বিশ্রাম নিলে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। প্রথম দিকে তাই কোন কিছুর শব্দ বা সামান্য উত্তেজনা আমাদের ঘুম ভাঙাতে পারে না। ঘুমের ফলে কোষগুলি যখন আবার সতেজ হয় তখন ঘুম ক্রমশঃ পাতলা হয়ে যায় এজন্য সামান্য শব্দ বা আলোতেই ঘুম ভেঙে যায়।
৮। মানুষ বামন হয় কেন ?
শরীরের হরমোন ঘটিত কারণে মানুষ বেঁটে হয়। মস্তিষ্কের নীচে পিটুইটারি গ্রন্থি থাকে। এই গ্রন্থি থেকে নির্গত বৃদ্ধি পোষক হরমোন শরীরের পেশীকলা ও হাড়কে পুষ্ট করে। এই গ্রন্থি দুর্বল হলে ব্রিদ্ধিপোষক হরমোন কম খরচ হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ ঠিকমত পুষ্টিলাভ করতে পারে না ফলে মানুষ বেঁটে হয়। আবার এই হরমোন বেশি ক্ষরিত হলেও মানুষ অত্যন্ত বেড়ে যায়।
৯। বদ্ধ ঘরে কাঠ কয়লার ধোঁয়া বিপজ্জনক কেন ?
খোলা ঘরে কাঠ কয়লা পুড়ে যে গ্যাস হয় তা বাতাসের সঙ্গে মিশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস তৈরি করে। বদ্ধ ঘরে কাঠ কয়লা পুড়ে কার্বন মনোক্সাইড নামে এক রকমের বিষাক্ত গ্যাস সৃষ্টি করে যার ফলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
১০। পাথুরে চুনে জল দিলে উত্তপ্ত ধোঁয়া বার হয় কেন ?
চুনা পাথর পোড়ালে ক্যালসিয়াম অক্সাইড তৈরি হয়। ইহা জীবাণু শুন্য তাই পাথুরে চুন জলে দিলে সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হয় এবং ক্যালসিয়াম হাইড্রঅক্সাইড পরিণত হয় তা থেকে ধোঁয়া বের হয়।
১১। অতিরিক্ত শীতে মানুষ কাঁপে কেন ?
শীতের দিনে বাইরের ঠাণ্ডা আবহাওয়া শরীরের তাপ অনেকাংশে টেনে নেয়। শরীরে ভারী পোশাক না থাকলে এই আকর্ষণ আরও বেশি হয় ফলে দেহের তাপ কমে গেলে শিত লাগে। অতিরিক্ত শীতে দেহের মাংসপেশী প্রয়োজনীয় তাপ উৎপাদনের চেষ্টা করে ফলে পেশীর সংকোচন ও প্রসারনের জন্য দেখা দেয় কাঁপুনি।
১২। ফুলে সৌন্দর্য ও মধুর সঙ্গে গন্ধের কি প্রয়োজন আছে ?
কাজের জন্য প্রকৃতি ফুলে মধুর সঙ্গে গন্ধের সমাবেশ ঘটিয়েছে। ফুল চলাচল করতে পারে না। পরাগ সংযোগ ঘটার ফলেই ফুল ফলে এবং বীজে পরিণত হয়। ফুলের গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছি ও প্রজাপতি মধুর লোভে ফুলে বসে এবং তাদের পায়ে লেগে থাকা রেণু স্ত্রীফুলে মিশে পরাগ-সংযোগ ঘটে। গন্ধের জন্যই ফুল মধুলোভী কীট পতঙ্গকে আকর্ষণ করে।
১৩। সমতল অপেক্ষা পাহাড় অঞ্চলে ঠাণ্ডা বেশি হয় কেন ?
নীচের দিকের বায়ুস্তর ঘন কিন্তু উপরের দিকে ক্রমশঃ পাতলা। ঘন বায়ুস্তরে সূর্যলোকের উত্তাপ ও পৃথিবীর মধ্যকার উত্তাপ যত বেশি থাকে হাল্কা বায়ুস্তরে ততটা থাকে না সেজন্যই পাহাড়ের ওপর অর্থাৎ সমতলের ওপরের দিকে ঠাণ্ডা বেশি বোধ হয়।
১৪। দিনের আলোয় গাছের পাতা সবুজ দেখা যায় কিন্তু লাল আলোতে কালো দেখায় কেন ?
দিনের আলোয় আলোয় সাতটি রং মিশে থাকে। গাছের পাতা সহযোগী সমস্ত রং শুষে নেয় কেবল সবুজ রংটি প্রতিফলিত হয়। তাই দিনের আলোয় সবুজ পাতা সবুজই দেখায়। লাল আলোতে সবুজ পাতা সব রং শুষে নেয় তাই কোন রং দেখা যায় না কেবল লাল দেখায়।
১৫। সূর্য উদয় হওয়ার সময় বা অস্ত যাওয়ার সময় সূর্যকে লাল দেখায় কেন ?
বায়ুমণ্ডলে থাকা সূক্ষ ধুলিকনা দ্বারা সূর্যের রশ্মি বিক্ষিপ্ত হয়। যে বর্ণের রশ্মির তরঙ্গ-দৈর্ঘ্য কম তার বিক্ষেপ বেশী হয়। লাল বর্ণের আলোক-রশ্মির তরঙ্গ-দৈর্ঘ্য অন্যান্য বর্ণের চেয়ে বেশী। তাই লাল বর্ণের আলোক-রশ্মির বিক্ষেপ অন্যান্য বর্ণের চেয়ে কম হয়। সূর্য উদয় বা অস্তের সময় সূর্য দিগন্তে থাকে বলে সূর্য রশ্মিকে অনেক বেশী পথ অতিক্রম করতে হয়। এর ফলে লাল বর্ণের অলোক-রশ্মি ছাড়া অন্যান্য বর্ণের রশ্মিগুলি বেশী বিক্ষিপ্ত হয়, ফলে ঐ রশ্মিগুলি আমাদের চোখে এসে পড়ে না। লাল বর্ণের রশ্মিগুলি কম বিক্ষিপ্ত হয় বলে আমাদের চোখে এসে পড়ে। তাই সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সময় সূর্যকে লাল দেখায়।
প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞানের ১৫ টি অজানা প্রশ্ন উত্তর
Reviewed by Wisdom Apps
on
September 21, 2018
Rating:
No comments: